দুধেও মিশছে বিষাক্ত রাসায়নিক! চিকিৎসার পরও ফের অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগীরা


পেটে ব্যথা নিয়ে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন হুগলির পুরশুড়ার বাসিন্দা রাঘব পাল। ডাক্তারবাবুরা দেখে জানান, গ্যাস্ট্রাইটিস। কিছু ওষুধ আর খাবারের নিয়ম-কানুন লিখে দিয়েই ছেড়ে দেন। দিনকয়েক সুস্থই ছিলেন। কিন্তু আবার পেটে ব্যথা। আবার এসএসকেএম। এবার একেবারে ভর্তিই হতে হল। বেশ কয়েকদিনের ভোগান্তি। নিজের তো বটেই, পরিবারেরও।

চিকিৎসায় সাময়িকভাবে সুস্থ হয়ে উঠলেও, ফের মাথাছাড়া দিচ্ছে অসুখ। বিপাকে রাজ্যের বহু মানুষ। উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরাও। কিন্তু, কেন এমনটা হচ্ছে? চিকিৎসকদের বক্তব্য, প্রধান কারণ খাবারে ভেজাল। খাবারে ফরমালিনের মতো রাসায়নিক উপস্থিতি ক্ষতি করছে কিডনি ও লিভারের। সেরে ওঠার পর রোগী যখন সেই ভেজাল খাবার খাচ্ছেন, তখন ফের অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কারণ ফরমালিনের মেশানো খাবারের মাধ্যমে মানবশরীরে ঢুকছে বিষ। সেই বিষের কোনও প্রতিষেধক নেই। তাই অসুখও পুরোপুরি সারছে না।

ভাগাড় কাণ্ডে তোলপাড় গোটা রাজ্য। আতঙ্কে মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে। মাছকে সতেজ রাখতে আবার ফরমালিন দেওয়া হয়, সেকথা জানতেও আর কারও বাকি নেই। তাহলে মানুষ খাবে কি? প্রোটিন জাতীয় থাবারে বলতে তো রইল গরুর দুধ। কিন্তু দুধেও যে মিশছে বিষাক্ত রাসায়নিক! জানা গিয়েছে, টাটকা রাখতে দুধে ফরমালডিহাইড নামে এক ধরণের রাসায়নিক মেশানো হয়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মৃতদেহে পচন রুখতে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার জলীয় দ্রবণ এই ফরমালডিহাইড। এক দুধ ব্যবসায়ী স্বীকারোক্তি, ২০ লিটার দুধে পাঁচ এমএল করে ফরমালডিহাইড মেশানো হয়। দু'দিন পর্যন্ত টাটকা থাকে দুধ। কেটে যায় না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফরমালডিহাইড লিভার ও কিডনির পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই বিষাক্ত রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে, লিভারের কোষগুলি নষ্ট হয়ে যায়। কিডনিতেও গুরুতর সমস্যা হতে পারে। বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, অসুখ সারলেও বিষাক্ত রাসায়নিক মেশানো খাবার খেলে তা ফের ফিরে আসে। এই রাসায়নিকের কোনও প্রতিষেধক নেই।