ঠিক যেন জালিয়ানওয়ালা বাগ! তুতিকোরিন নিয়ে সরব বিরোধীরা


তুতিকোরিনে বিক্ষোভ।

দূষণ ছড়ানো কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলিতে তুতিকোরিনে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।পাশাপাশি, কর্তৃপক্ষ ওই তামা কারখানা সম্প্রসারণের যে আর্জি জানিয়েছিলেন, বুধবার তা স্থগিত করে দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আন্দোলনকারীদের দাবি, তামা কারখানাটির বিরুদ্ধে দূষণের যে অভিযোগ তাঁরা করেছিলেন, তা যে ভুল নয় সেটা আদালতের রায়ের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট হয়ে গেল।

তামিলনাড়ুতে বেদান্ত গোষ্ঠীর ইউনিট স্টারলারলাইট-এর ওই কারখানাটির বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ নতুন নয়। তুতিকোরিনের বাসিন্দাদের দাবি, স্টারলাইটের জন্য এলাকার মাটি, বাতাস ও ভূগর্ভের জল বিষিয়ে গিয়েছে। ছড়িয়ে পড়ছে ক্যানসার, হৃদরোগ, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টের মতো হরেক সমস্যা। কিন্তু, এর পরেও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য স্টারলাইট নতুন করে কারখানা সম্প্রসারণের চেষ্টা করলেশুরু হয়েছিল আন্দোলন। মঙ্গলবার সেই আন্দোলনের ১০০ দিনের মাথায় এলাকার বাসিন্দারা কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করে। তখনই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।

এ দিন নতুন যে ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, তা কিন্তু কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তামিলনাড়ুর পুলিশকে। ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, গতকাল সংঘর্ষের সময় সাদা পোশাকের এক ব্যক্তি অবিকল কম্যান্ডোদের কায়দায় পুলিশ-বাসের উপর উঠে গুলি চালাচ্ছে রাইফেল থেকে। অনেকেরই ধারণা, ওই ব্যক্তি পুলিশের কর্মী। তিনি যখন গুলি চালাচ্ছেন, সে সময় পাশ থেকে কেউ এক জন বলেছিলেন, ''আজ ওদের কাউকে না কাউকে মরতেই হবে।''

তবে কি পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল? এই প্রশ্ন নিয়ে বিরোধীরা সরব। তুতিকোরিনে পুলিশের গুলিচালনাকে ১৯১৯ সালের 'জালিয়ানওয়ালা বাগ' হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন। কার নির্দেশে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পুলিশের গুলিতে আহত হওয়ায় তুতিকোরিনের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অন্তত ৪৩ জনকে। আজ তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান চলচ্চিত্র থেকে রাজনীতির জগতে পা রাখা কমল হাসন। বিরোধীদের সম্মিলিত চাপের মুখে পড়ে অস্বস্তিতে এআইএডিএম-কে সরকার। গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই পলানীস্বামী।