শৌচাগারে কিশোরীর ছবি তুলে ধৃত ‘কাকু’


'কাকু' নিশ্চয় এমন করতে পারে না। সে জন্যই মার্চ মাসে বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলেনি মেয়েটি। অভিযোগও করেনি। একা একাই ভয় পেয়েছে। কাকুর সঙ্গে দেখা হলেই লুকিয়ে পড়েছে। লজ্জায়, ভয়ে। ১৬ বছরের মেয়েটির অভিযোগ, তারই মধ্যে রাস্তায় একা দেখলেই কাকু তাকে ডেকে মোবাইল খুলে অশ্লীল ভিডিয়ো দেখতে বাধ্য করেছে। বলেছে, ''তোরও এরকম ভিডিয়ো হবে।'' অভিযোগ, গত ২২ মে বস্তির 'কমন' শৌচাগারে স্নান করার সময় ফের মোবাইলে মেয়েটির ছবি তোলার চেষ্টা করে ওই 'কাকু'। 

এর পরেই ঘটনার কথা পরিবারের সকলকে জানায় মেয়েটি। বুধবার দুপুরে থানায় অভিযোগ করে মেয়েটির পরিবার। বিকেলেই বছর চল্লিশের ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত তপন মণ্ডলকে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্ত, দু'জনেই রবীন্দ্র সরোবর অঞ্চলের পঞ্চাননতলা বস্তির বাসিন্দা। অভিযোগকারী মেয়েটি দিদি, মা, বাবার সঙ্গে থাকে। সেই গলিরই সামনের দিকে বাড়ি তপনের। স্থানীয়েরা জানান, তপনের সন্তান অভিযোগকারিণীর প্রায় সমবয়সি। খেলার সঙ্গীও বটে।

স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা হালদার বলেন, ''তপনকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরে তার স্ত্রী এসেছিলেন ক্ষমা চাইতে। বিষয়টি মিটমাট করে নিতেও বলেছিলেন। কিন্তু আমরা রাজি হইনি। বস্তির সকলেই খুব ভয় পেয়েছে। ওই শৌচাগার আমরা সকলেই ব্যবহার করি।'' 

তপনের স্ত্রী টুম্পা মণ্ডলের অভিযোগ, ''কয়েক দিন আগে ওই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে আমার বচসা হয়েছিল। সে জন্যই আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।'' স্থানীয় কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত করছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, তপনের মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেখান থেকে বেশ কিছু ছবি উদ্ধার হয়েছে। তবে অভিযোগকারিণীর ছবি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মোবাইলটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্যও পাঠানো হবে। অভিযোগকারিণী অবশ্য এখনও ভীত সন্ত্রস্ত। একা শৌচাগারে যেতে ভয় পাচ্ছে সে। সারাক্ষণ চোখের সামনে ভাসছে 'কাকু'র মোবাইলটি।