দিনে ক’বার যৌনমিলন ‘স্বাভাবিক’! সঙ্গম নিয়ে খোলামেলা আলোচনা


কী হবে সুস্থ যৌনতার মাপকাঠি? দৈনিক ঠিক কতবার মিলিত হলে তাকে 'স্বাভাবিক যৌনতা' বলা যাবে? এই ধরনের প্রশ্ন নিয়ে দম্পতিদের মধ্যে কানাঘুষো চলতে থাকে হরদম। অনেকেই থেরাপিস্টের দ্বারস্থ হন নিজেদের যৌনলিপ্সা, সঙ্গমের আকুতি স্বাভাবিক কি না জানতে। চিকিৎসক, গবেষকরা কিন্তু এ বিষয়ে অভয়বাণী শোনাচ্ছেন। 

বিখ্যাত ওয়েব শো 'সেক্স এস্টিম'-এর হোস্ট সেক্স থেরাপিস্ট সারি কুপার জানাচ্ছেন, দাম্পত্য যৌনতায় স্বাভাবিকতার কোনও নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। সঙ্গমের যে পজিশন, যে ফ্রিকোয়েন্সি এক দম্পতির কাছে অস্বাভাবিক, তা অন্যের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হতেই পারে।

তবে এখানেই সমস্ত প্রশ্নচিহ্ন শেষ হয়ে যায় না। যৌবনের দামাল দিনগুলি পেরিয়ে এসে অনেকেই অস্বস্তিতে ভুগতে শুরু করেন। বয়সোচিত কারণে যৌনতার ফ্রিকোয়েন্সি নামতে শুরু করলে অনেক দম্পতি অবসাদে ভোগেন। দাম্পত্যে শীতলতার ভয় প্রভাব ফেলে পারফরম্যান্সে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে দম্পতি বছরে দশ বারের কম যৌন সংসর্গে লিপ্ত হন, তাঁদের সম্পর্ককে 'সেক্সলেস ম্যারেজ' বা অযৌন দাম্পত্য বলা চলে। ফ্রিকোয়েন্সি এর বেশি হলে ঘাবড়াবার কিছু নেই। এ ব্যাপারে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে তুলনায় না যাওয়াই ভাল। যৌনতা কোনও রেসের মাঠ নয়। প্রতিবেশী বা কলিগের সঙ্গে 'রোটি-কাপড়া-মাকান'-মার্কা রোজের কম্পিটিশনের ব্র্যাকেটে দাম্পত্য যৌনতাকে বসালে চলবে না। এক্ষেত্রে এক এবং একমাত্র প্রায়োরিটি, দোঁহে মিলে সুখের শীর্ষে পৌঁছে যাওয়া। 

তবে সমস্যা বাড়ে দম্পতির যৌনরুচির পার্থক্য ঘটলে। অনেক ক্ষেত্রে, সেক্স ড্রাইভের পার্থক্য সম্পর্ককে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। বরফ গলা তো দূরের কথা, ক্রমেই শরীর মনের দূরত্বের কারণে শুকিয়ে যাওয়া সস্পর্কে ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার কোনও অবকাশ থাকে না। সিঁদ কেটে ঢুকে পড়ে নতুন সম্পর্ক। তিলে তিলে গড়া ভালবাসার ইমারত ধসে পড়ে এক লহমায়।

এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের দাওয়াই, সম্পর্ক বাঁচাতে যত শিগগির সম্ভব ময়নাতদন্তে নেমে পড়তে হবে। প্রথমেই খতিয়ে দেখতে হবে, যৌন বোঝাপড়ার অভাবের পিছনে আসল কারণটা কী।

সমস্যা যেমন আছে, তেমন দাওয়াইও আছে। সবটাই নির্ভর করছে কত তাড়াতাড়ি উপসর্গ ধরতে পারা যাচ্ছে তার ওপর। তবে কিছু সহজ টোটকা যে ক‌োনও দম্পতিকেই সুস্থ, সুন্দর, নিয়মিত যৌনতার গাড়িটাকে সচল রাখতে সাহায্য করবে।

নিচে রইল চার দাওয়াইঃ
১. নিজেদের মধ্যে সারাদিনের কথাবার্তা বাড়ান। খুঁটিনাটি বিষয়ে মনযোগ এক ধরনের মুগ্ধতা, আনুগত্য তৈরি করে।
২. জন্মদিন, বিয়ের তারিখ তো আছেই। ছোট ছোট ব্যক্তিগত উদযাপনের সুযোগ ছাড়বেন না। অপ্রত্যাশিত উপহার পারস্পরিক দূরত্ব মেটাতে সাহায্য করে ।     
৩. সঙ্গীর ভুলের রেকর্ড রেখে যখন তখন লং প্লেয়িং ডিস্ক চালানোর অভ্যাস থাকলে তা এবার ছাড়ার সময় এসেছে।
৪. তাড়াহুড়ো করবেন না। ধৈর্যও হারাবেন না। যৌনতায় তালে তাল না মেলাতে পারলে মূল সুরটা অধরাই থেকে যাবে।
কথা ফুরোনোর আগে, যে মন্ত্রটি আবার দেওয়ার— দাম্পত্য যৌনতা এক বিরাট জগৎ, ভুল-ঠিকের ফস্কাগেরোয় না পড়ে তাকে অহরহ আবিষ্কার করতে হবে।