তামিলনাড়ুতে বিক্ষোভ সমাবেশ গুলি, ১১ জনের মৃত্যু


বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলিবৃষ্টির জেরে তামিলনাডুতে নিহত ১১ জন, আহত একাধিক। বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। 

তামিলনাড়ুর টুটিকোরিন শহরের তামা কারখানা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের উপর মঙ্গলবার পুলিশ গুলি চালালে নয় জন ঘটনাস্থলে মারা যান। গুরুতর আহত বেশ কয়েক জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

রাজ্য সরকার প্রকাশিত বিবৃতিতে হতাহতের সঠিক হিসেব পাওয়া যায়নি। হিসেব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরাও। তবে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য ডি জয়কুমার সরকারি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করার সময় ঘটনায় হতাহতের কথা স্বীকার করেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, অন্তত নয় জন প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। 

গত তিন মাস যাবত টুটিকোরিনের স্টারলাইট কপার স্মেলটিং প্লান্ট বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি রাজ্যের এআইএডিএমকে সরকার। এদিন কারখানার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। অভিযোগ, প্রতিবাদীরা নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করে জেলাশাসকের দপ্তর ঘেরাও করতে গিয়ে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করেন। 

মন্ত্রী জয়কুমারের দাবি, প্রতিবাদ ক্রমে হিংস্র রূপ ধারণ করায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। 
বিরোধী দলনেতা এম কে স্তালিন রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে কারখানা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। 

অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ কমল হাসান কড়া সমালোচনা করে জানান, 'নাগরিকরা অপরাধী নন। অথচ তাঁদেরই প্রাণ হারাতে হল। এটা পুরোপুরি সরকারের গাফিলতি। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সরকার আমল দেয়নি।' 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের মার্চ মাসে কারখানা সংলগ্ন এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দার শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা ও গলায় সংক্রমণ দেখা দেয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি অমান্য করার অভিযোগে প্রথমে কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েও পরে তা আবার খোলার অনুমতি দেয় জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনাল। ওই বছরেই এমডিএমকে প্রধান ভাইকোর নেতৃত্বে আর্জির জেরে দূষণ ছড়ানোর জন্য কারখানার মালিক সংস্থা বেদান্ত গ্রুপকে ১০০ কোটি টাকা জরিমানা করে সুপ্রিম কোর্ট। 

এই সমস্ত নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এখনও বহাল তবিয়তে চালু রয়েছে টুটিকোরিনের স্টারলাইট তামা কারখানা। বর্তমানে সেখানে কাজ করেন প্রায় ১০০০ স্থায়ী এবং ২০০০ চুক্তিবদ্ধ কর্মী। এছাড়া কারখানা সূত্রে প্রায় ২৫,০০০ মানুষ পরোক্ষে রোজগার করেন বলেও জানা গিয়েছে।