মুম্বইয়ে হানা দিয়েছিল পাক জঙ্গিরাই, মানলেন নওয়াজ


পাকিস্তানে যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় এবং তারাই যে মুম্বইয়ে হামলা চালিয়েছিল তা মেনে নিলেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানে ভোটের আগে এই মন্তব্য করে তিনি একইসঙ্গে ভারত, আমেরিকা ও পাক সেনাকে বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে ধারণা কূটনীতিকদের।

পাকিস্তানের এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শরিফ বলেছেন, ''পাকিস্তানে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়। আমরা তাদের সীমান্ত পেরিয়ে মুম্বইয়ে হত্যাকাণ্ড চালাতে দিয়েছি। পাকিস্তানে মুম্বই হামলার মামলাও শেষ হয়নি। এমন নীতির ফলেই পাকিস্তান আজ বিশ্বে কোণঠাসা।'' তাঁর মতে, পাকিস্তান অনেক আত্মত্যাগ করেছে। কিন্তু এই নীতির জন্যই দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের বক্তব্য শুনতে রাজি নয় বিশ্ব। তাঁর কথায়, ''সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাস চালাতে দেওয়ার নীতি কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংও সে কথা বলেছেন।''

সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন শরিফ। এরই জেরে আগামী নির্বাচনে তাঁর ভাই শাহবাজকে প্রার্থী করবেন তিনি। পাক সেনার সমর্থন রয়েছে শরিফের প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরান খানের পিছনে।

কূটনীতিকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে ভারত ও আমেরিকাকে কিছুটা মৈত্রীর বার্তা দিতে চেয়েছেন শরিফ। সেইসঙ্গে গোটা বিশ্বেই এখন সংঘর্ষ কমানোর চেষ্টা চলছে। কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় কূটনৈতিক দুনিয়ায় একদা কার্যত ব্রাত্য উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলন করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে সংঘাত ও জঙ্গিদের মদত দেওয়ার নীতি নিয়ে চললে যে পাকিস্তান বিপাকে পড়বে তা স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন শরিফ। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। পাকিস্তানের পুরনো মিত্র চিন ও নতুন মিত্র রাশিয়াও যে এই নীতি পছন্দ করছে না তাও পাক সেনাকে বোঝাতে চেয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।

পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়াও গত বছর থেকেই ভারতের সঙ্গে আলোচনার বার্তা দিচ্ছেন। ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় আপাতত কিছুটা হলেও শান্তি ফেরাতে পাক সরকারের একাংশ উদ্যোগী হতে পারে বলে ধারণা কূটনীতিকদের একাংশের।