আলিঙ্গন করে সাসপেন্ড ছাত্রের নম্বরে চোখ ছানাবড়া শিক্ষকদেরই


তিরুঅনন্তপুরম : ছেলে তো নয়, যেন কীর্তির পাহাড়। স্কুলের মধ্যে সহপাঠিনীকে দীর্ঘ সময় ধরে আলিঙ্গন করা, এবং সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে সাসপেন্ড হওয়া—সবই ঘটে গিয়েছে তার সঙ্গে। কিন্তু সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় সেই ছেলেই চোখ ছানাবড়া করে দিয়েছে সক্কলের। 'ব্যাড বয়' হিসেবে পরিচয় তার,কিন্তু ৯১.২ শতাংশ নম্বর পেয়ে তিরুঅনন্তপুরমের সেই কিশোর যেন রাতারাতি হয়ে উঠেছে 'গুড বয়'।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থেই তার নাম প্রকাশ্যে আনা যাচ্ছে না। তবে শোনা যায়, তিরুঅনন্তপুরমের সেন্ট থমাস সেন্ট্রাল স্কুলের ওই ছাত্রের দৌলতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মাথার চুল খাড়া হতে বসেছিল। সমস্যা চরমে ওঠে গত বছরে। স্কুলের মধ্যেই এক কিশোরীর সঙ্গে 'লং হাগ' বা দীর্ঘ আলিঙ্গন। নিজের কীর্তি জাহির করার জন্য ওই ছবি সে পোস্ট করেছিল ইনস্টাগ্রামে।

শুধু কেরল নয়, এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দু'জনকেই সাসপেন্ড করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। মামলা গড়ায় কেরল  হাইকোর্টে। শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে, এমন যুক্তি দিয়ে বিষয়টিতে নাক গলাতে রাজি হয়নি আদালত। অতএব সেই সময় ছাত্রের ভবিষ্যত্‌ নিয়ে গুরুতর প্রশ্নওঠে। একদিকে তো সাসপেনশন, তার উপর এগিয়ে আসছে বোর্ডের পরীক্ষা। মনে করা হয়েছিল, হয়ত সে এবার পরীক্ষায় বসতেই পারবে না।

হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনে যায় ছাত্রের পরিবার। কমিশনের নির্দেশে তাকে ফিরিয়ে নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, বোর্ডের পরীক্ষায় যাতে তাকে বসতে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে আবেদন করে গত ডিসেম্বরেই সিবিএসই-র কাছে চিঠি লেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতদিনের টালবাহানা, পরীক্ষা দিলেও কেমন হবে, তা নিয়ে সন্দেহে ছিল ছাত্রের পরিবার। অবশেষে গত শনিবার ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায় তার নম্বর ৯১.২ শতাংশ। ইংরেজিতে সে পেয়েছে ৮৭, অর্থনীতিতে ৯৯, হিসেবশাস্ত্রে ৮৮। এ ছাড়া বিজনেস স্টাডিজে ৯০ এবং সাইকোলজিতে ৯২। এমন নম্বরে স্কুল কর্তৃপক্ষ উচ্ছ্বসিত। স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন, নিজের জীবনে শৃঙ্খলা আনতে পারলে ওই ছাত্র অনেক দূর যাবে।