বন্ধুর মৃত্যুতে জটিল খুনের তদন্ত


রাজারহাটের সালুয়ায় অভিজিৎ সামুইয়ের (৪৪) রহস্যমৃত্যু ঘিরে এখনও অন্ধকারে বিধাননগর কমিশনারেট। হাতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকলেও তা অস্পষ্ট। এরই মধ্যে ঘটনার এক দিন পরেই নিহতের বন্ধুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নিছক কাকতালীয় কি না, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।

গত শনিবার রাজারহাটের সালুয়ায় নির্মীয়মাণ বাড়ির দোতলার সিঁড়িতে মশারির ভিতরে অভিজিতের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর ক্ষত ছিল। নির্মীয়মাণ বাড়িতে মাল্টিজিম তৈরি করছেন বাড়ির মালিক আবুল বাশার মণ্ডল। ওই বাড়ির সিঁড়িই ছিল অভিজিতের আশ্রয়স্থল। ঘটনার দিন রাজমিস্ত্রিরা সিঁড়িতে উঠে অভিজিৎকে উঠতে বলেন। কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে মশারি তুলতেই তাঁরা বিস্মিত হয়ে যান। দেখেন, মাথার নীচে দু'হাত রেখে ডান দিকে পাশ ফিরে শুয়ে আছে অভিজিতের নিথর দেহ। শুধু বাঁ দিকের থুতনির নীচে অনেকখানি গভীর ক্ষত। চোখ খোলা। মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কমিশনারেট সূত্রের খবর, সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের কাছে একটি আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাতে রাত সাড়ে ৩টের সময়ে এক ব্যক্তিকে দা হাতে রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেই ব্যক্তির মুখ এতই অস্পষ্ট যে, তাকে চেনা যাচ্ছে না।

এরই মধ্যে পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে রবিবার বাগুইআটির দশদ্রোণে শম্ভু মণ্ডলের (৪০) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা। কমিশনারেট সূত্রের খবর, শম্ভু এবং অভিজিৎ দুই বন্ধু ছিলেন। পরপর দুই বন্ধুর এমন পরিণতি তদন্তের দিক থেকে নিছক কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা। দশদ্রোণের ঘোষপাড়ায় ভাইদের সঙ্গে থাকতেন শম্ভু। রবিবার সকালে বারবার ডেকে সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভেঙে পরিজনেরা দেখেন, পেশায় দিনমজুর শম্ভুর দেহ চালার খুঁটি থেকে ঝুলছে। পরিবারের সদস্যেরাই দেহ নামিয়ে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শম্ভুকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

অভিজিতের মৃত্যু প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, পারিবারিক অশান্তির জেরে বছর দশেক আগে অভিজিৎকে বাড়ি থেকে বার করে দেন তাঁর দাদারা। নিহতের পারিবারিক বাড়ি ভেঙে প্রোমোটিংয়ের কথাবার্তা চলছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিজিতের মৃত্যুর দু'দিন পরেই প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। রহস্য-মৃত্যুর সমাধানে এই পুরো ঘটনাক্রমকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যদিও সূত্র এখনও অধরা।