আন্টার্কটিকায় বরফের নীচে রয়েছে আস্ত একটা পর্বতশ্রেণী!


রহস্যে মোড়া একটা মহাদেশ। তবে আকারে তেমন বড় নয়। মোটামুটি হিসেব করে বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ার দ্বিগুণ। নাম, আন্টার্কটিকা। যার বেশির ভাগটাই বরফের চাদরে ঢাকা। কী আছে সেই চাদরের নীচে? সাম্প্রতিক আবিষ্কারের ভিত্তিতে ব্রিটেনের এক দল গবেষক জানিয়েছেন, পশ্চিম আন্টার্কটিকার বিস্তীর্ণ বরফস্তরের নীচে রয়েছে আস্ত একটা পর্বতশ্রেণি। যেন সারি দিয়ে রয়েছে মগ্নমৈনাকেরা। তাদের মাঝে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে কয়েকশো মাইল ছড়ানো তিনটি উপত্যকাও। এই অনুসন্ধান নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে 'জিয়োফিজ়িক্যাল রিসার্চ লেটার্স' পত্রিকায়।

কত দিন চলছে এই লুকোচুরি? এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বরফ-তল্লাশি চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ভূপৃষ্ঠের ছবি তুলে চলেছে প্রচুর কৃত্রিম উপগ্রহ। মাটির গভীরে কোথায় কী রয়েছে, তার ছবিও ধরা পড়ে তাতে। কিন্তু সেগুলির প্রায় সবই এমন ভাবে পৃথিবীকে পাক খাচ্ছে যে, দক্ষিণ মেরুর  ওই অংশ এত দিন ধরা পড়েনি সেগুলির ক্যামেরা বা রেডারে। তাই বরফ ভেদ করে দেখতে পায় এমন বিশেষ রেডারের সাহায্যে এই মহাদেশের মানচিত্র নতুন ভাবে তৈরি করতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই উঠল পর্দা।

'পোলার গ্যাপ' নামে গবেষকদের বিশেষ এই অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে, পশ্চিম এবং পূর্ব আন্টার্কটিকার বরফের আস্তরণকে জুড়ে রেখেছে ওই তিন উপত্যকা। কিন্তু এতে একটা সমস্যাও আছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ওই বরফ ঢাকা পাহাড় ও উপত্যকার কারণে  সমুদ্রতলের উচ্চতা বা়ড়তে পারে অচিরে। সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন  গবেষকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, উষ্ণায়নে বিশ্বের সর্বত্র বরফ গলছে। ব্যতিক্রম নয়, আন্টার্কটিকার ওই বরফের চাদরও। বরফ গলে স্বাভাবিক নিয়মেই তা ছড়িয়ে পড়ার কথা। কিন্তু এখানে বাগড়া দিচ্ছে তলায় লুকিয়ে থাকা ওই পর্বতশ্রেণি আর উপত্যকা তিনটি। বরফ গলে দ্রুত আন্টার্কটিকার মাঝের অংশ থেকে সরে যাচ্ছে কিনারার দিকে। আর এই কারণেই আগামী দিনে সমুদ্রের জলস্তর আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।