বিষাক্ত মিষ্টি খাইয়েই স্বামী স্ত্রীকে খুন!


হুগলি: খুনের হাতিয়ার মিষ্টি! বিষাক্ত মিষ্টি খাইয়েই স্বামী স্ত্রীকে খুন করেছে বলে অভিযোগ। মৃতার পরিবারের দাবি, বউদির সঙ্গে স্বামীর বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কের কথা জেনে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। প্রতিবাদ করায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল। জামাই ও তাঁর দাদা-বউদির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির উত্তরপাড়ায়।

অভিযুক্তের নাম রাকেশ শর্মা। ক্যুরিয়ার সংস্থায় চাকরি করেন তিনি। বাড়ি হুগলির কোন্নগরের আদর্শনগরে। বছর দুয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল রাকেশের। স্ত্রী ববিতার বাপের বাড়ি উত্তরপাড়ার মাখলা দলুইপাড়ায়। পরিবারের লোকেদের দাবি, মেয়ের বিয়ের সময় জামাই রাকেশকে লক্ষাধিক টাকা নগদ ও বাইক দিয়েছিলেন তাঁরা। দেওয়া হয়েছিল যৌতুকের অন্যান্য সামগ্রীও। কিন্তু, রাকেশ ও ববিতার দাম্পত্য সুখের হয়নি। বিয়ের কয়েক মাস পরে ববিতা জানতে পারেন, নিজের বউদির সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্ক রয়েছে রাকেশের। বিষয়টি বাপের বাড়িতে জানিয়েছিলেন বছর সাতাশের ওই তরুণী। এরপরই রাকেশ, ববিতার উপর অত্যাচার করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এমনকী, গর্ভবতী হওয়ার পরও রেহাই মেলেনি। লাগাতার শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চলতে থাকে।

গত জানুয়ারি মাসে মেয়ের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েক নিজের কাছে নিয়ে চলে আসেন ববিতার বাবা পরমেশ্বর শর্মা। ফ্রেরুয়ারিতে রাকেশ ও ববিতার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। ববিতার পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, বাপের বাড়িতে এসেও স্ত্রীকে নানাভাবে অপমান করত রাকেশ। শনিবার সকালেও উত্তরপাড়ায় ববিতাদের বাড়িতে গিয়েছিল সে। যথারীতি ওই তরুণীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করে। রাতে ফের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান রাকেশ। তাঁর শ্বশুর পরমেশ্বর শর্মা জানিয়েছেন, মিষ্টি নিয়ে এসেছিল জামাই। মেয়ের সঙ্গেও ভাল ব্যবহার করছিল। স্ত্রীকে মিষ্টি ও জল খাইয়ে কোন্নগরে ফিরে যায় রাকেশ। এই ঘটনার আধঘণ্টার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে ববিতা শর্মা। তাঁর মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরত শুরু করে। গভীর রাতে ববিতাকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। রবিবার সকালে মারা যান বছর সাতাশের ওই গৃহবধূ। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে স্ত্রীকে খুন করেছে রাকেশ। ঘটনায় রাকেশ শর্মা ও তাঁর দাদা-বউদি বিরুদ্ধে উত্তরপাড়া থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা।