রামরহিম ভক্তদের নিয়ে আশায় জোট


জাঠ এবং মুসলিম ভোটকে এক করার জন্য কৈরানা এবং নূরপুর উপনির্বাচনে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি বিরোধী মহাজোট। কিন্তু ঘটনাচক্রে তাদের একটি বোনাস ভোটব্যাঙ্কও জুটে গিয়েছে বলে ভোটের পরে দাবি করছেন আরএলডি এবং এসপি নেতারা। এঁরা হলেন জেলবন্দি রাম রহিমের বিপুল সংখ্যক স্থানীয় অনুগামী।

গত বছর ধর্ষণের অভিযোগে জেলে গিয়েছে স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম। এই কৈরানা জেলাতেই রয়েছে তার একাধিক ডেরা এবং লক্ষাধিক অনুগামী। অথচ গত এক বছরে রাম রহিমকে মুক্ত করার জন্য যোগী আদিত্যনাথের 'নিষ্ক্রিয়তায়' বেজায় খাপ্পা তার ভক্তরা। যাঁদের বক্তব্যের নির্যাস, 'সরকার আমাদের বাবাকে বাঁচানোর জন্য কোনও চেষ্টাই করেনি। তাঁকে জেলে ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। কেন আমরা শাসক দলের পক্ষে ভোট দেব? ২০১৫ সালে আমরা নরেন্দ্র মোদীজির পক্ষে ভোট দিয়েছিলাম। কিন্তু এ বার চৌধরি সাহেবের প্রার্থীকেই দিয়েছি।''

বিজেপিকে ভোটের বাক্সে 'সবক' শেখাতে মরিয়া এই অংশটিকে বড় পাওনা বলেই মনে করছেন বিরোধী জোটের প্রার্থী তবস্সুম হাসান। এসপি এবং বিএসপি পাশে রয়েছে ঠিকই, কিন্তু এ বারের উপনির্বাচন আরএলডি নেতা অজিত সিংহের কাছে কার্যত বাঁচা-মরার লড়াই। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর ভোটব্যাঙ্ক খালি করে বিজেপির দিকে চলে গিয়েছিলেন জাঠেরা। এ বারে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে তাই মরিয়া ছিল আরএলডি। অজিত সিংহের পুত্র জয়ম্ত চৌধরি গত এক মাসে প্রবল দাবদাহের মধ্যেও প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২টি গ্রামে ঘুরেছেন। গিয়েছেন প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চরণ সিংহের কথা মনে করিয়ে দিয়ে (যিনি নিজেও মুসলিম এবং জাঠ ভোটকে এক সঙ্গে টানতে পেরেছিলেন) আবেগদীপ্ত বক্তৃতা দিয়েছেন আরএলডি-র শীর্ষ নেতারা। সূত্রের খবর, জাঠ সম্প্রদায়ের বয়স্করা প্রকাশ্যেই এগিয়ে এসেছেন আরএলডি-র পক্ষে। অবশ্য যুবা সম্প্রদায় দ্বিধাবিভক্ত। তাঁদের অনেকেই এখনও আশাবাদী, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের জন্য কিছু করে দেখাবে বিজেপি সরকার।

সমাজবাদী পার্টির প্রধান তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদব ইচ্ছাকৃত ভাবেই কৈরানা ভোট প্রচারে যোগ দেননি বলে জানাচ্ছে তাঁর দল। এসপি নেতা রাজেন্দ্র চৌধরি এ কথা জানিয়ে বলেছেন, অখিলেশ ভোট প্রচারে এলে মুজফ্ফরাবাদের সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি মেরুকরণের সুযোগ পেয়ে যেত। আর সেই কারণেই বিরাট সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক থাকা সত্ত্বেও সপা নেতা আজম খানও এখানে প্রচারে আসেননি। আজমের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক অশান্তি বাধানোর অভিযোগ এনেছিল বিজেপি।