বন্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার মেয়ে দ্বাদশে কাশ্মীর-সেরা


তিহাড় জেলের বিশাল দরজাটার সামনে ভোর পাঁচটা থেকে অপেক্ষা করেছেন। কিশোরীর সেই অপেক্ষা চলেছে টানা পাঁচ ঘণ্টা। তার পরে জেলবন্দি বাবার সঙ্গে মাত্র কুড়ি মিনিট দেখা করতে পেরেছেন সামা সাবির শাহ। আজ সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় গোটা জম্মু-কাশ্মীরে প্রথম স্থান পেয়ে বাবার কথাই বেশি মনে পড়ছে সামার।

সামা সাবির শাহ। উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাবির আহমদ শাহের মেয়ে। পড়েন শ্রীনগরের দিল্লি পাবলিক স্কুলে। ৯৭.৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি লিখেছেন, 'নিজের পরিশ্রম আর জেদে সব বাধা অতিক্রম করেছে সামা। সে আমাদের রাজ্যের তরুণদের সামনে অনুপ্রেরণা।' সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের টাকা লেনদেনের অভিযোগে গত বছর সামার বাবাকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বাবার কথা বলতে গিয়ে আবেগ ঠেলে বেরিয়ে আসে সামার। বলেন, ''আজ আমার সাফল্যের খবরটা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু বাবা তো এখনও জানে না। মিস করছি বাবাকে। ''

সামা আর তাঁর বোনকে সামলান মা বিলকিস। বিলকিস বলেন, ''এত মানসিক চাপ সত্ত্বেও মেয়ে যে এমন ফল করল, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।'' প্রতি মাসেই বাবার সঙ্গে দেখা করতে তিহাড়ে যান সামা। রেজাল্টের পরে তো আরও যাবেন। তখনই জানালেন জেলের সামনে দীর্ঘ অপেক্ষার কথা। বললেন, ''কখনও এ সব ভুলতে পারব না। পাঁচটা ঘণ্টা বই পড়ে কাটাই। তার পর বাবার দেখা পাই। কুড়ি মিনিটের জন্য।'' বাবার দল 'জম্মু-কাশ্মীর ডেমোক্র্যাটিক ফ্রিডম পার্টি'ও অভিনন্দন জানিয়েছে সামাকে। রাখঢাক না করেই সামা বলেছেন, ''জম্মু-কাশ্মীরের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য বাবা যা করছে, তাতে আমার পূর্ণ সমর্থন আছে। বাবাকে নিয়ে গর্ব হয় আমার।''