জেলা পরিষদ জিতলে সব যুবক-যুবতীকে স্মার্টফোন! বিতর্কে মুকুল

বিজেপি নেতা মুকুল রায়।

জলপাইগুড়ি :  বিজেপি-কে জেতালে তরুণ ভোটারদের সবাইকে স্মার্টফোন উপহার দেওয়া হবে বলে বিতর্কে জড়ালেন মুকুল রায়। শনিবার জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙায় এক সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন তৃণমূল এবং বর্তমান বিজেপি নেতা। সেখানেই তাঁর প্রতিশ্রুতি, জেলা পরিষদে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ১৮ বছরের বেশি বয়সের সব যুবক-যুবতীকে দেওয়া হবে স্মার্টফোন। মুকুলের এই প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী বিধিভঙ্গ বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অভিযোগ জানানো হবে নির্বাচন কমিশনেও।

জলপাইগুড়ি সেই জেলাগুলোর অন্যতম যেখানে প্রায় পুরোদস্তুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে পঞ্চায়েত ভোটে। ১৯টা জেলা পরিষদ আসনের সব কটাতেই ভোট হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতেও হাতে গোনা আসনে শাসক দল তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে পেরেছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে অবিভক্ত জলপাইগুড়িতে (তখন জলপাইগুড়ি ভেঙে আলিপুরদুয়ার তৈরি হয়নি) জেলা পরিষদ ভোটে বিপুল ভাবে জিতেছিল বামেরা। পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতেও অনেকটা সংখ্যাধিক্য ছিল বামেদের। যদিও পরবর্তীতে দলবদলের তোড়ে প্রায় সবই বামেদের হাত থেকে চলে যায় তৃণমূলের দিকে। এ বার বামেদের সরিয়ে জলপাইগুড়িতে তারা উঠে আসবে বলে খুবই আশাবাদী বিজেপি।

মুকুল রায় শনিবার ঘুঘুডাঙার সভায় বলেন, তিনি পুরো মাত্রায় আশাবাদী জলপাইগুড়ির জেলা পরিষদ বিজেপি পাবে। আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে, "ওই জেলা পরিষদ জেলার যত যুবক-যুবতী ১৮ বছরের ওপর রয়েছে, তাদের প্রত্যেককে একটা করে স্মার্টফোন দেবে"— বলেন মুকুল। কেন স্মার্টফোনের প্রতিশ্রুতি তার ব্যাখ্যাও দেওয়ার চেষ্টা করেন মুকুল। বলেন "আমার সরকার (অর্থাত্ মোদী সরকার) চাইছে ক্যাশলেস ট্র্যানজাকশন। এই ক্যাশলেস ট্র্যানজাকশন করতে গেলে স্মার্টফোন দরকার।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে খোঁচা দিয়ে তাঁর বক্তব্য, "ওই খেলার পয়সা দিয়ে দিলাম, মেলার পয়সা দিয়ে দিলাম, লীলাখেলার পয়সা দিয়ে দিলাম— ও সব দোবো না। জেলা পরিষদ ১৮ বছরের বেশি সব যুবক-যুবতীকে স্মার্টফোন দেবে।"

শনিবার মুকুল যখন জলপাইগুড়িতে এই বক্তব্য রাখছেন, তার আগেই রেলে চাকরির টোপ দিয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাঁর শ্যালক সৃজন রায়কে গ্রেফতার করে উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর থানার পুলিশ। এ প্রসঙ্গে মুকুল বলেন, "কয়েক মাস রেলমন্ত্রক চালিয়েছি। হঠাৎ ন'টা লোককে নিয়ে আসা হল। আর বলা হল, তারা নাকি তিন লক্ষ টাকা করে আমাকে দিয়েছে। টাকাটা নাকি নিয়েছে আমার শ্যালক। আমি নাকি উপস্থিত ছিলাম। আমার শ্যালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাকেও গ্রেফতারের ছক করা হচ্ছে।" মুকুলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন বলেই নিথ্যে মামলায় তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।