ফোন খারাপ, ২১ বছরে ক্ষতিপূরণ ২২ লক্ষ


এক ব্যবসায়ীর ল্যান্ডফোন খারাপ হয়ে গিয়েছিল ২১ বছর আগে। এজন্য বিএসএনএলের বিরুদ্ধে ২২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের দাবি ঘিরে সরগরম রায়গঞ্জ।

১৯৯৭ সালে ল্যান্ডফোনটি খারাপ হয়ে যায় রায়গঞ্জের কুমারডাঙির বাসিন্দা ব্যবসায়ী লখনলাল শর্মার। বারবার বলা সত্ত্বেও বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ তাঁর কথায় গুরুত্ব দেননি বলে লখনলালের অভিযোগ। শেষে পরের বছর ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। আদালতের নির্দেশে ২০০২ সাল পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা গত ডিসেম্বরে তাঁকে দিয়েছে বিএসএনএল। সংস্থার দাবি, ওই বছরেই তারা ওই ব্যবসায়ীর ফোনটি সারিয়ে দেয়। কিন্তু লখনলালের পাল্টা বক্তব্য, এখনও তাঁর ফোনটি সারানো হয়নি। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ফোন ঠিক না-হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীর দাবিমতো প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাই মঙ্গলবার রায়গঞ্জের আদালতে ওই মামলায় অবিলম্বে ফোন ঠিক করার আর্জি জানান এবং ২০০২ সাল থেকে বাকি ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা চেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।

বিএসএনএলের রায়গঞ্জের টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার শোয়েব আবেদ আলি বলেন, ''১৯৯৭ সালের ঘটনা। সেই সময় ২১০ টাকা বিল দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী। অথচ ফোন ঠিক না-হওয়ার অভিযোগে তাঁকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকার মতো ক্ষতিপূরণ দিতে হল। ২০০২ সালে আমরা ফোন সারিয়ে দিয়েছি। তাই ওই সময় পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।''

আদালতের রেজিস্ট্রার মনোজিৎ রাহা জানান, ফোন খারাপের জন্য লখনলালের ব্যবসা মার খাচ্ছিল। শেষ দেওয়া বিলের টাকা সুদসমেত ফেরত চেয়ে এবং ব্যবসায় ক্ষতির জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকা দাবি করে ১৯৯৮ সালে ৯ মার্চ মামলা করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সালে ২৪ ডিসেম্বর আদালত ফোনের লাইন ঠিক করার নির্দেশ দেয়। তা না-হওয়া পর্যন্ত ১৯৯৭ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২১০ টাকার উপর বার্ষিক ১৮ শতাংশ হারে সুদ-সহ তা ফেরত এবং প্রতিদিন ৩০০ টাকা হিসাবে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ রাজ্য কমিশনে, জাতীয় কমিশনে এবং সুপ্রিম কোর্টে যান। সব জায়গাতেই নিম্ন আদালতের রায়কে বহাল রাখতে নির্দেশ দেয়। তার পরেও বিএসএনএল টাকা না দেওয়ায় রায়গঞ্জের টেলিকম ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজারের বিরুদ্ধে সমন জারি হয় ২০০২ সালে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। টিডিএমকে ধরে আদালতে তোলা হয়। এর পরে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দেয় বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ। তবে বাকি টাকার দাবিতে ফের আবেদন করা হচ্ছে।