আর্কিওলজিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তুঘলক আমলের সৌধ হয়ে গেল মন্দির!


নয়াদিল্লি: তুঘলকের আমলের কোনও এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সমাধিস্থল ছিল দিল্লির হুমায়নপুরে। কার সমাধি, কেউ না জানলেও এতদিন ধরে অক্ষত অবস্থায় ছিল সেটি। হঠাৎ বদলে গেল সেই সৌধ। রাতারাতি বানিয়ে ফেলা হল মন্দির। বসল মূর্তি। গায়ে চড়ল গেরুয়া রঙ।

স্বাভাবিকভাবেই এই বদলে বিতর্ক শুরু হয়েছে এলাকায়। সফদরজং-এর হুমায়ুনপুরে ঘর-বাড়ি আর পার্কের মাঝেই ছিল সেই সৌধ। এখন তার সামনে পাতা দুটি গেরুয়া বেঞ্চ। তাতে লেখা দুই বিজেপি কাউন্সিলরের নাম। যদিও এই বিষয়ে দায় এড়াচ্ছে সবাই।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও সৌধের গায়ে সাদা রঙ দেওয়া, কিছু আঁকা যায় না। এমনকী সৌধের আসল অস্তিত্ব ধ্বংস করাও উচিৎ নয়। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনিশ সিসোডিয়া জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এমন কোনও খবর আসেনি। তিনি এবিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে।
 
গত বছর দিল্লির প্রত্নতত্ত্ববিভাগ ও Indian National Trust for Art and Cultural Heritage (INTACH) যৌথ উদ্যোগে ওই সৌধের মেরামতির কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় লোকের বাধায় সেটা সম্ভব হয়নি।

মন্দিরের সামনে পাতা দুটি গেরুয়া বেঞ্চে লেখা সফদরজং-এর কাউন্সিলরের নাম রাধিকা আবরোল ফোগট। তিনি জানিয়েছেন তাঁকে না জানিয়েই হয়েছে এই কাজ। এই কাজে তাঁর কোনও সমর্থনও ছিল না। তাঁর দাবি, প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলরের উদ্যোগেই নাকি এটা হয়েছে।

২০১০ সালে দিল্লির আরবান ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এই সৌধটিকে ৭৬৭টি হেরিটেজ সাইটের একটি বলে চিহ্নিত করে। ২০১৪ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও এটিকে হেরিটেজ বলে উল্লেখ করে। তা সত্বেও কীভাবে এটিকে মাত্র দু'মাসের মধ্যে মন্দিরে বদলে ফেলা হল, তা দেখে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা।