২২ বছর পরে বিয়ে রাজস্থানের রাজঘাটে


এক দশকেরও বেশি সময় সানাই শোনেনি কেউ। রাজস্থানের ঢোলপুরের গ্রামটি থেকে গত সপ্তাহে বরযাত্রীরা যখন বেরোলেন, সে রেকর্ড শেষমেশ ভাঙল। বরের মুখে হাসি ফুটল। ১৯৯৬ সালের পরে ফের গোটা গ্রাম বরণ করল আর এক নতুন বৌমাকে।

বর ২৩ বছর বয়সি পবন কুমার। বৌ মধ্যপ্রদেশের। ঢোলপুরের রাজঘাট গ্রামে মেয়ের বিয়ে দিতে এত দিন কোনও মা-বাবাই রাজি হতেন না। ঢোলপুর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের গ্রামে কাঁচা মাটির ঘরগুলোয় মাত্র ৩৫০ লোকের বাস। চম্বল নদীর ধারে ছোট ধুলোভরা এ গ্রামে রাস্তা নেই। বিদ্যুৎ নেই। জলের লাইনও তথৈবচ। চিকিৎসার ন্যূনতম পরিষেবা নেই। সূর্য ডুবলে গোটা গ্রাম অন্ধকার। মাত্র একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে গুটিকয় পড়ুয়া। গ্রামের ১২৫ মহিলার মধ্যে নিজের নাম ঠিক করে লিখতে পারেন শুধু দু'জন। এঁরা কেউ জীবনে টিভি বা ফ্রিজ দেখেননি। গত ২২ বছরে তাই এ গ্রামে মেয়ে পাঠানোর কথা ভাবতে পারেননি কেউ।

তা হলে পবন কুমারের এই সৌভাগ্য হল কী করে? ঢোলপুরের বাসিন্দা এবং জয়পুরের সোয়াই মান সিংহ মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস ছাত্র অশ্বিনী পরাশরের দৌলতে ছবিটা পাল্টাচ্ছে। গ্রামের দুর্দশা নিয়ে রাজস্থান হাইকোর্টে গত বছর একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন তিনি। চিঠি লিখে পাঠান প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও। রাজঘাটকে বাঁচানোর জন্য হ্যাশট্যাগে #সেভরাজঘাট লিখে অনলাইনে প্রচার শুরু করেছেন অশ্বিনী।

বর অবশ্য ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে যেতে পারেননি। তাতে আক্ষেপ নেই পবনের। ঘরে বৌ তো এল! রাজঘাটে এখন এটাই বড় কথা।