সস্তা হোক বৈদ্যুতিক গাড়ি, দিশা চায় শিল্প


টুকটাক সুবিধা দিয়ে আখেরে কাজের কাজ কিছু হবে না। বরং কম দামে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির স্পষ্ট দিশা দিক কেন্দ্র। তবেই চড়বে চাহিদা। বাড়বে বিক্রি। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক এ ধরনের গাড়ির জন্য কিছু নতুন পরিকল্পনা ঘোষণার পরে, এ বার এই দাবিই তুলল গাড়ি শিল্প। তাদের বক্তব্য, অনেক কিছু বলা হয়েছে। কিন্তু সস্তায় ক্রেতার হাতে সেগুলি তুলে দেওয়ার কোনও দিশা মেলেনি।

ব্যাটারির খরচ বেশি হওয়ায় সাধারণ গাড়ির চেয়ে বৈদ্যুতিকের দাম পড়ে অনেক বেশি। আর সেটাই তার বিক্রি বাড়ানোর পথে সব থেকে বড় কাঁটা বলে মনে করে শিল্প।

হালে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বাড়ানো নিয়ে তরজা চলছে জোর। দূষণ ও জ্বালানি আমদানির খরচ কমাতে কেন্দ্র বারবরাই সংস্থাগুলিকে শুধু এই গাড়ি আনতে বলছে। আর শিল্পের দাবি, সে জন্য আগে নীতি স্পষ্ট করা হোক। এই অবস্থায় সম্প্রতি সরকার জানিয়েছে, পার্কিং বা টোলে ওই গাড়িগুলিকে বাড়তি সুবিধা দিতে সেগুলির নম্বর-প্লেট আলাদা হবে।

এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও বৈদ্যুতিক গাড়ির সংগঠন সোসাইটি অব ম্যানুফ্যাকচারার্স অব ইলেকট্রিক ভেহিক্‌লসের (এসএমইভি) মতে, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তো সেগুলির দাম। এসএমইভির কর্তা সোহিন্দর গিলের প্রশ্ন, ''ক'জন টোল প্লাজা দিয়ে যাতায়াত করেন? কিন্তু খরচ কমলে অনেকেই ওই গাড়ি কিনতে পারেন।'' তাঁর দাবি, গাড়ি কেনার সময় পথকর ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যে রেজিস্ট্রেশনের খরচ শূন্য বা নামমাত্র রাখা হোক। কেনার খরচ কমলে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়বে।

এর আগে গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম-ও দীর্ঘ মেয়াদে এই গাড়ির ব্যবসা লাভজনক করতে কর ছাড়-সহ নানা সুবিধা জরুরি বলে দাবি করে।

উল্লেখ্য, এখন কেন্দ্রের 'ফেম' প্রকল্পে এই গাড়িতে এককালীন ভর্তুকি মেলে। সোহিন্দরের দাবি, তার পরেও গত বছর মাত্র ১,২০০টি ব্যক্তিগত বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি থেকেই স্পষ্ট যে, তা চাহিদা বাড়াতে যথেষ্ট নয়। ব্যক্তিগত ব্যবহারের চাহিদা না বাড়লে, শুধু ট্যাক্সি বা গণপরিবহণে বাধ্যতামূলক ভাবে বিক্রি ব্যবসা বাড়বে না। টুকটাক বিচ্ছিন্ন কিছু সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা বিভ্রান্তি বাড়ায় বলেও দাবি সোহিন্দরের। তাঁর মতে শুধু সবুজ নম্বর প্লেট গাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়াবে না।

এ দিকে, 'ফেম' প্রকল্পে প্রায় এক দশক ধরে বৈদ্যুতিক গাড়িতে ভর্তুকি দেওয়া হলেও, সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে, 'ফেম-২' প্রকল্পে সেই সুবিধা না-ও মিলতে পারে। যা শুনে গাড়ি শিল্পের প্রশ্ন, সরকার আসলে ঠিক কী চাইছে? সব মিলিয়ে তাই আরও একবার এ নিয়ে স্পষ্ট নীতি আনার দাবি তুলছে তারা।