মরণকামড় কি ট্যারান্টুলার! এগরার যুবকের মৃত্যু নিয়ে উঠছে প্রশ্ন


ছেলের চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন চেন্নাই। ফেরার পথে ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এগরার যুবক পিন্টু সাউ (৩৭)। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, পায়ে বিষাক্ত ট্যারান্টুলার কামড় খেয়ে ছটফট শুরু করেন পিন্টু। টিকিট পরীক্ষককে জানিয়েও ট্রেনে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা যায়নি। শেষে রবিবার রাতে তাঁকে ভর্তি করানো হয় এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। তবে চিকিৎসা শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় পিন্টুর।   

সত্যি কি ট্যারান্টুলার কামড়েই মৃত্যু? এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার রাকেশ জানা বলেন, ''ওই যুবক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁর ব্লাডসুগারও ছিল খুব বেশি। আর বাঁ পায়ের নীচের অংশে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছিল। পরিজনেরা ট্যারান্টুলার কামড়ের কথা বলছেন। ঠিক কী হয়েছিল জানতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।'' আর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ''ঠিক কী ঘটেছে স্পষ্ট নয়। ওই যাত্রীর পরিবারের তরফে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানালে খতিয়ে
দেখা হবে।''

পিন্টুর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ২ ব্লকের মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটদা গ্রামে। গত ৩০ এপ্রিল ন'বছরের ছেলে প্রতীকের স্নায়ুর রোগের চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন পিন্টু ও তাঁর স্ত্রী প্রণতি সাউ। চিকিৎসা শেষে ১৯ মে শনিবার তিরুনেলভেলি স্টেশন থেকে ডাউন কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে ওঠেন তাঁরা। প্রণতির দাবি, ''চেন্নাই স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই ঘুমের মধ্যে পায়ে কিছু কামড়েছে বলে চেঁচিয়ে ওঠেন আমার স্বামী। আমিও ঘুম ভেঙে তাকিয়ে দেখি, কালো মাকড়সার মতো একটা কিছু চলে গেল।'' এরপর পিন্টুর বাঁ পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। কিন্তু ট্রেনের টিকিট পরীক্ষককে বারবার বলা হলেও তিনি গুরুত্ব দেননি বলে প্রণতির অভিযোগ। শেষে রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ খড়গপুরে নেমে অসুস্থ স্বামীকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান প্রণতি। কিন্তু চিকিৎসা শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যেই পিন্টুর মৃত্যু হয়। মৃতের শ্যালক চন্দন ভুঁইয়ার অভিযোগ, ''একা একজন মহিলা টিটিকে বারবার অনুরোধ করার পরেও ডাক্তার আসেনি। ঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে জামাইবাবুকে মরতে হত না। এর দায় রেলের।''