জল রাখার সহজ পন্থা আবিষ্কার করে জাপানে পাড়ি সিউড়ির পড়ুয়া


সিউড়ি: গরমে ঠান্ডা এবং শীতে গরম। এভাবে জল রাখার সহজ পন্থা উদ্ভাবন করে জাপান যাচ্ছে মাড়গ্রামের এক ছাত্র। আগামী ২০ মে সাত দিনের এক বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবে শ্যামল কুমার দাস। জাপানি সংস্থা নিজেদের খরচে তাকে নিয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।

মাড়গ্রাম হাই স্কুলের ছাত্র শ্যামল এবার মাধ্যমিক দিয়েছে। বাড়ি মাড়গ্রামের শিবতলা পাড়ায়। বাবা গোপীনাথ দাস পেশায় তাঁত ব্যবসায়ী। মা প্রভাতী দাস গৃহবধূ। ২০১৩ সালে বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় সে জলের ট্যাঙ্ক তৈরি করে সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান দখল করে।  সেই মডেলের দৌলতেই এবার জাপান যাত্রা। শ্যামল জানাচ্ছে, সে এমন একটি সিমেন্টের জলের ট্যাঙ্ক তৈরি করেছে যাতে গরমে জল ঠান্ডা ও শীতে গরম থাকে। তার তৈরি ট্যাঙ্কে দু'টো স্তর রয়েছে। দু'টো স্তরের মাঝের ফাঁকা জায়গায় বালি ভরে দেওয়া হয়। ট্যাঙ্কের ঢাকনাটি কাঠের। গরমের দিন ট্যাঙ্কের জল ভরার সময় কিছু জল উপচে পড়বে দু'টি ট্যাঙ্কের মাঝের স্তরে বালির মধ্যে। ফলে বাইরের তাপ ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে না। জল থাকবে ঠান্ডা। এবার শীতের সময় জলের পিভিসি পাইপের বদলে কপার পাইপ লাগাতে হবে। ঢাকনা হবে কাচের। ফলে শীতের সময় জল থাকবে স্বাভাবিক গরম।

বিষয়টি দূতাবাসের মাধ্যমে জাপান সরকারের নজরে আসে। তারপরই জাপান সরকারের "অনুপ্রাণিত পুরস্কার স্কিমে' সাকুরা এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায় শ্যামল। ২০ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত চলবে এই বিজ্ঞান প্রদর্শনী। শ্যামলের স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরণ মোস্তফা বিশ্বাস বলেন, "শ্যামল পঞ্চম শ্রেণি থেকেই মেধাবী। তার এই বিজ্ঞান মানসিকতায় আমরা খুশি। তাই আমরাই স্কুল থেকে ওর পাসপোর্ট করে দিয়েছি"। দেশের ৩২ জন খুদে বিজ্ঞানী এবার জাপান যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সুযোগ পেয়েছে একমাত্র শ্যামল। শ্যামলের বাবা গোপীনাথ দাস বলেন, "আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। মাটির বাড়ির মধ্যে ছেলেকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী বসবাস করি। ছেলের এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। তবে এর পিছনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রচুর অবদান রয়েছে"। শ্যামলের এই সাফল্যে গর্বিত সহপাঠীরাও। তবে দিল্লি পর্যন্ত শ্যামলকে যেতে হবে নিজের খরচে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে এলাকাবাসীর দাবি সরকার পাশে দাঁড়ালে শ্যামলের জাপান যাত্রা ও মসৃণ হতে পারে।