কুৎসা-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের জয় হয়েছে: মমতা


'কুৎসা, অপপ্রচার, রাজনৈতিক কর্মী কেনাবেচা' নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগকে 'নজিরবিহীন' আখ্যা দিলেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নবান্নে সাংবাদিকদের সামনে আসেন মমতা। সেখানেই ফল নিয়ে এক দিকে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অন্য দিকে রাজনৈতিক হিংসায় নিহতদের প্রতি সমবেদনাও জানান। 

মমতা বলেন, 'এত বড় একটা নির্বাচন হয়েছে। যে সমস্ত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশ আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। এক অংশের মিডিয়া নির্বাচনের দিন হওয়া অনঅভিপ্রেত ঘটনা নিয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। ঘটনার পেছনে যে আরও ঘটনা থাকতে পারে সেটা তারা ভেবে দেখে না। সে দিন যে ১৩ জন নিহত হয়েছেন তার মধ্যে ১০ জনই তৃণমূল কর্মী। একজন প্রিসাইডিং অফিসারও মারা গিয়েছেন। সমস্ত ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার সঙ্গে মিডিয়ার ক্রমাগত আমাদের অসম্মান করাটাও সমান দুঃখজনক।' 

 বিজেপি এ রাজ্যে মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। যে সমস্ত জেলা বিজেপি শাসিত রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া সেই জেলাতে ভালো ফল করেছে বিজেপি। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। প্রচুর টাকা-অস্ত্র ঢোকানো হয়েছে রাজ্যে। ভোটের দিন বাংলাদেশিদের ঢুকিয়ে উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু জায়গায় বিএসএফ সক্রিয় কেন হয়েছে সেটা আমরা ভালোই জানি। সামান্য একটা অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল বলে আরাবুলকে তত্‍ক্ষণাত্‍ গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিয়েছি। ও জেলে বসেও জিতেছে। শুধু ও নয়, ওর ছেলে-বৌ সকলেই জিতেছে। মানুষ ভালো না বাসলে এটা হয় না। এর মধ্যে অনেক নির্দল প্রার্থী এবং বিজেপি প্রার্থীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।' 

নিহতদের ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভোট প্রক্রিয়া মিটে গেলে এ নিয়ে আলোচনা করব। ক্ষতিপূরণ দিলে আমি সকলকেই দেব। কোনও একজনকে নয়। প্রিসাইডিং অফিসার যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর ক্ষেত্রে ট্রেনের ড্রাইভারই পরের স্টেশনে গিয়ে হিট অ্যান্ড রান রিপোর্ট করেছে। আমি তাও সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে সিআইডির হাতে কেস তুলে দিয়েছি। তাঁর পরিবারকে দেখা আমার দায়িত্ব।' 

তিনি আরও জানান কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএম জোট করে রাজ্যের নানা কাজে বিঘ্ন তৈরি করছে। মমতার কথায়, 'কোনও কাজ করতে পারছি না। সব ব্যাপারে মামলা। কলকাতা থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে মামলা চলছে। বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস এমনটা করছে। কী পেল ওরা? মাঝখান থেকে সমস্ত জেলা হাতছাড়া হল ওদের।' 
পঞ্চায়েতের ফল প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, 'পঞ্চায়েত নির্বাচন ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন সেমিফাইনাল। এবং সব শেষে বিধানসভা হল ফাইনাল। এই নির্বাচনে সকলে বুঝেছে বাংলার প্রধান বিরোধী শক্তি বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বুঝবে কত ধানে কত চাল। তার পর তো ফাইনাল আছেই।'