স্বামীর ক্ষমা নেই! ছেলেকে নিয়ে আলাদা বাঁচবেন, বললেন অভিযুক্ত হকারের স্ত্রী অর্ক ভাদুড়ি |


গ্রেফতার হওয়ার পর অসিত রাই।

অসিত ও তার স্ত্রী, দু'জনেরই ছোটবেলা কেটেছে ভদ্রশ্বরে। একমাত্র ছেলে সল্টলেকের একটি কলেজ থেকে পাশ করে এখন প্রফেশনাল কোর্স করছেন।

মোবাইলে স্বামীর 'কীর্তি' দেখার পর শনিবার দু'বার জ্ঞান হারিয়েছেন বছর চল্লিশের মহিলা। মুখে-চোখে জল দিয়ে অন্য হকাররাই তাঁকে সুস্থ করেছেন। বাসে দুই তরুণীর সামনে অশালীন আচরণের দায়ে অভিযুক্ত অসিত রাইকে এদিন সন্ধ্যায় পুলিশ গ্রেফতার করার পর তার স্ত্রী বললেন, ''আমি একজনের স্ত্রী, একজনের মা। কিন্তু সবার আগে আমি একজন নারী। সেই জায়গা থেকে বলছি, দু'টো ফুলের মতো মেয়ের সঙ্গে যে নোংরামি ও করেছে, তারপর আমার স্বামীর কোনও ক্ষমা নেই। ওকে ঘেন্না করি। আমি চাই ওর কড়া শাস্তি হোক।''
হাতিবাগানের ফুটপাথে অসংখ্য ছোট ছোট স্টলের একটা অসিত এবং তার স্ত্রীর। ফড়িয়াপুকুরের মোড়ে তাঁদের ব্যাগের দোকানের বয়স হল প্রায় সাড়ে তিন দশক। ৩০বি/১ নম্বর বাসে দুই কলেজছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করার পর দিনভর ওই দোকানেই ছিলেন ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা অসিত। এক হকার বলেন, ''ও যে এত বড় নোংরামি করে এসেছে, তা তো আমরা কিছুই জানতাম না। বিকেল নাগাদ আমাদের একজনের মোবাইলে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিওটি আসে। খবর যায় ওর স্ত্রীর কাছেও। নিজের চোখে ভিডিওটি দেখে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি উনি। একাধিকবার দেখার পর অজ্ঞান হয়ে যান। ওঁর জন্য খারাপ লাগছে।'' সন্ধ্যায় পুলিশ এসে অসিতকে ওই দোকান থেকেই গ্রেফতার করে।

অসিত ও তার স্ত্রী, দু'জনেরই ছোটবেলা কেটেছে ভদ্রশ্বরে। একমাত্র ছেলে সল্টলেকের একটি কলেজ থেকে পাশ করে এখন প্রফেশনাল কোর্স করছেন। কান্নায় ভেঙে পড়ে মহিলা এদিন বলেন, ''ও একটা নোংরা লোক। পরিবারটাকে শেষ করে দিল। আমি ওর সঙ্গে থাকতে চাই না। এই দোকানে আমি আর ওকে ঢুকতে দেব না। ছেলেটাকে কষ্ট করে বড় করেছি। ওকে আঁকড়ে আমি লড়াই করব। দোকান চালাব। দেখি ইউনিয়নের নেতারা কী বলেন।''

স্থানীয় হকারেরা অবশ্য তাঁর পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। হকার সংগঠনের নেতা অমল সাহা বলেন, ''ওর তো কোনও দোষ নেই। ওর পাশে আমরা আছি, থাকব। ও দোকান করবে।'' তাঁর কথায়, ''অসিতের জন্য আমাদের মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে।'' মহিলার কথায়, ''১৯৯৪ সালে আমাদের বিয়ে হয়েছে। তারপর থেকে তো দেখছি। কোনও অসুস্থতা নেই। ও একটা নোংরা লোক। আর কিছু বলব না।''