ফিরে এল ইতিহাস! ৭ দিনের পর এবার ২দিনেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরলেন ইয়েদুরাপ্পা


২০০৭-০৮ সালে সাতদিনের সরকারের পর তিন বছরের কিছু বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা। দুর্নীতির অভিযোগে পদ থেকে সরে দাঁড়ানো। কাট টু ২০১৮। দুই দিনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারবেন না বুঝতে পেরেই আস্থাভোটের কিছুক্ষণ আগেই আবেগমথিত ভাষণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করা। গত একদশকে এভাবেই বারবার মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ কাঁটার মতো বিঁধেছে ইয়েদুরাপ্পাকে।

এবারে ভোটে জিতে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন। তবে শনিবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন ইয়েদুরাপ্পা।
 
২০০৭ সালের মতো অবস্থা হল এই বিজেপি লিঙ্গায়েত নেতার। সেবার মাত্র ৭দিনের সরকার ছিল ইয়েদুরাপ্পার। ১২ নভেম্বর ২০০৭ থেকে ১৯ নভেম্বর ২০০৭ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। এবার রইলেন দুই দিনের কিছু বেশিক্ষণ। ১৭ মে সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ১৯ মে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত।

ঘটনা হল, দ্বাদশ বিধানসভায় ২০০৪ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার গড়ে এইচডি কুমারস্বামীর জেডিএস। ১ বছর ৮ মাস যেতে না যেতেই সেই সরকার থেকে বেরিয়ে আসে জেডিএস। ফলে কংগ্রেসের সরকার থেকে সরে যেতে হয় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ধরম সিংকে।
সেইসময়ে বিজেপির নেতৃত্বে সরকার তৈরি করেন কুমারস্বামী। তিনি হন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় স্থির হয়েছিল, কুমারস্বামী সরকারের প্রথম ২০ মাস মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। পরের ২০ মাস বিজেপির তরফে বিএস ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

সেইমতো ২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর পর্যন্ত কুমারস্বামী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০ মাস হওয়ার পরে তিনি চুক্তিমতো ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চাননি ইয়েদুরাপ্পাকে। ফলে সরকার ভেঙে দেন। ৩৩দিনের জন্য কর্ণাটকে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন।

এরপরে ফের বিএস ইয়েদুরাপ্পা ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন। তবে সাতদিনের মধ্যে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় তাঁকে সরে যেতে হয়। ফের ছয় মাসের জন্য রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় কর্ণাটকে। এবারও শপথ নিয়েও ইয়েদুরাপ্পাকে সরে দাঁড়াতে হল।

২০০৮ সালে ত্রয়োদশ বিধানসভা ভোটে জিতে ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রী হন। মোট ৩ বছর ৬২ দিন তিনি সরকারে ছিলেন। তবে খনি দুর্নীতি রিপোট সামনে আসায় ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে যেতে হয়। আর এবার আস্থা ভোটে জিততে পারবেন না বুঝেই ভোটাভুটিতে না গিয়ে ইয়েদুরাপ্পা সরে দাঁড়ালেন।