১৪ বছরের ছাত্রর সঙ্গে সম্পর্ক, বাধা দিলে আত্মহত্যার চেষ্টা, গ্রেফতার শিক্ষিকা


চন্ডিগড়: বাড়িত টিউশন পড়তে আসত ১৪ বছরের এক ছাত্র। সেই ছাত্রর যৌন নিগ্রহের অভিযোগে গ্রেফতার ৩৪ বছরের শিক্ষিকা। চন্ডিগড়ে এই ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার ওই শিক্ষিকার সঙ্গে নির্যাতিত ছাত্রর বাবা-মায়ের তীব্র বচসা হয়। এরপর তাঁরা চাইল্ডলাইন ( নির্যাতনের শিকার শিশুদের জন্য ২৪ ঘন্টার টোল ফ্রি হেল্পলাইন)-এ ফোন করে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। চন্ডিগড়ের সিনিয়র পুলিশ সুপার নিলাম্বরী বিজয় জাগদালে জানিয়েছেন, তাঁরা এই ঘটনায় শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে সুরক্ষা (পকসো) আইনের ৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত একটি সরকারি স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষিকা ও নির্যাতিত পড়ুয়া চন্ডিগড়ের সেক্টর ৩১-এর রাম দরবার কলোনির বাসিন্দা। দুই পরিবারই একে অপরের পরিচিত। এই সূত্রেই নির্যাতিত পড়ুয়া ও তার ছোট বোন গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অভিযুক্তর কাছে টিউশন শুরু করে।

চন্ডিগড়ের চাইল্ডলাইনের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর ড. সঙ্গীতা জুন্ড বলেছেন, ওই শিক্ষিকা পড়ুয়ার বাবা-মায়ের কাছে তাঁদের মেয়েকে আলাদা করে পাঠাতে বলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এতে তিনি তাঁদের ছেলের পড়াশোনায় ভালোভাবে নজর দিতে পারবেন। শিক্ষিকার কথায় রাজি হন ওই পড়ুয়ার বাবা-মা। এরপরই এ বছরের শুরু থেকে ওই পড়ুয়াকে শারীরিকভাবে প্রলোভন দেখাতে শুরু করেন ওই মহিলা। ওই পড়ুয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে তাকে একটি সিমকার্ডও দেন তিনি।

গত মার্চে ছেলেটির গ্রেডের অবনতি হওয়ায় পড়ুয়ার মা তাকে ওই শিক্ষিকার কাছে টিউশনের জন্য পাঠানো বন্ধ করে দেন।

ড. জুন্ড বলেছেন, এরইমধ্যে ওই ছেলেটি সম্পর্কে অধিকারবোধ গড়ে ওঠে ৮ ও ১০ বছরের দুই কন্যা সন্তানের জননী ওই শিক্ষিকার। গত এপ্রিলে তিনি ওই পড়ুয়ার বাবা-মায়ের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁদের ওই পড়ুয়াকে অনন্ত একবার তাঁর বাড়িতে পাঠানোর কাতর আর্জি জানান।

গত সোমবার ওই পড়ুয়া তাঁর বাড়িতে গেলে তিনি একটি ঘরে তাকে আটকে দেন। পড়ুয়ার বাবা-মা এবং স্বামী ও সন্তানদের উপস্থিতিতেই এই কাণ্ড করেন তিনি। পুরো ঘটনা থেকে দূরে থাকতে বলেন স্বামীকে। পড়ুয়ার বাবা-মায়ের চিত্কার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।

ঘটনার শেষ এখানেই নয়। পড়ুয়াটি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়িতে পৌঁছনোর পর তাদের অনুসরণ করে এসে পৌঁছন ওই শিক্ষিকাও। ছাত্রটির বাড়িতে থাকা একটি বোতল থেকে কাফ সিরাপ খেয়ে দাবি করেন যে, তিনি আত্মহত্যা করছেন।
পড়ুয়ার বাবা-মা পুলিশে ফোন করেন। মহিলাকে সোমবার রাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরইমধ্যেই চাইল্ডলাইনে ফোন করে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়ার বাবা-মা। গত বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকাকে স্থানীয় আদালতে পেশ করা হলে তাঁর বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।