রাজা রামমোহন রায়ের ২৪৬ তম জন্মদিনে গুগল ডুডলের শ্রদ্ধার্ঘ


নয়া দিল্লি: রাজা রামমোহন রায়ের ২৪৬ তম জন্ম বর্ষ উদযাপন করল গুগল ডুডল৷ মঙ্গলবার আধুনিক ভারতের সৃষ্টিকর্তার জন্মবর্ষে সম্মান জানাল গুগল ডুডল৷ ভারতের ইতিহাসে ও ভারতীয় সংস্কৃতিতে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান অনস্বীকার্য৷

১৭৭২ এর ২২ মে জন্ম নেন ভারতীয় রেনেসাঁর জনক৷ মুর্শিদাবাদের খানাকুলের রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি৷ রামমোহন রায়ের বাবা রামকান্ত রায় হিন্দু ব্রাহ্মণ হওয়া সত্বেও রামমোহন রায় কোনও দিনই মূর্তি পূজা ও চিরাচরিত হিন্দু ধর্মের গোঁড়ামিতে বিশ্বাসী ছিলেন না৷ ব্রহ্ম সমাজ আন্দোলন শুরু করেন ১৮২৮ সালে৷

যুবক বয়সেই তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে ধর্ম নিয়ে মতবিরোধের কারণে গৃহত্যাগী হন৷ এরপর তিনি হিমালয় ও তিব্বতের ঘুরে বেড়ান৷ বেশ কিছুদিন পর তিনি বাড়ি ফিরলে তাঁর মতাদর্শ পালটাবে ভেবে তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু তাতেও কিছু ফল হয়না৷ রাজা রামমোহন রায় আগের মতই হিন্দু ধর্মের গোঁড়ামি নিয়ে ধর্মান্ধ মানুষদের সঙ্গে বাক যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন৷ ব্যঙ্গ করতে থাকেন হিন্দুত্বের গোঁড়ামিতে যারা বিশ্বাসী ছিলেন তাঁদের৷

তিনি বেদ ও উপনিষদ পড়ে ফেলেন এবং তাঁর প্রথম বই "তুহফত আল-মুয়াহিদিন" লেখেন৷ যার মধ্যে দিয়ে তিনি ধর্মান্ধতার বিরোধিতা করেন ও তা মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন৷

আজও মহিলারা তাঁদের সমান অধিকার নিয়ে লড়াই করে চলেছে৷ কিন্তু আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে সতীদাহ প্রথা রুখতে মহিলাদের পাশে দাঁড়ান রাজা রামমোহন রায়৷ সমাজে বহু তিরস্কার সহ্য করেও তিনি এই জঘন্য সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন৷ সেই সতীদাহ প্রথা বন্ধ হয় তাঁর হাত ধরেই৷ কোনও বিধবা মহিলাকে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর পুড়িয়ে মারা যাবেনা এই নিয়ে দীর্ঘ লড়াই লড়েন তিনি৷ তিনি পুরুষ সমাজে মহিলাদের সমান অধিকার নিয়েও লড়াই করেন৷ সেই সময়েই তিনি সতীদাহ বন্ধ করে মহিলাদের বিধবাবিবাহ ও সম্পত্তির অধিকার নিয়েও লড়াই করেন৷

সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা নিয়েও লড়াই করেন তিনি৷ তাঁর পত্রিকা 'সংবাদ কৌমুদীতে' তিনি ফ্রিডম অফ প্রেস নিয়ে লড়াই চালিয়েছেন৷ রাজা রামমোহন রায় বিশ্বাস করতেন শিক্ষাই সমাজ পরিবর্তন করতে পারে৷ সমাজের চিন্তাধারার উন্নতির ও পরিবর্তনের একটাই পথ তা হল শিক্ষা৷