ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে ছিনতাইকারীকে ধাওয়া যুবতির


মালদা : ট্রেন সবে স্টেশনে দাঁড়িয়েছে। আচমকা এক দুষ্কৃতী এসে এক যুবতির হাত থেকে মোবাইল, ব্যাগ নিয়ে চম্পট দিল। ভয় না পেয়ে ওই যুবতি ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে ছিনতাইকারীর পিছু নিলেন। তবে তাকে ধরতে পারেননি। গতরাতে হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের একটি সংরক্ষিত কামরায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মালদা রেল পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৈত্রেয়ী ঝা নামে ওই যুবতির বাবা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।

মালদা শহরের কানির মোড় এলাকার বাসিন্দা মৈত্রেয়ী ঝা। কলকাতার যোগমায়া দেবী কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী। তাঁর বাবা তুষারকান্তি ঝা ইংরেজবাজারের শান্তা দেব্যা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা জয়শ্রী ঝা গৃহবধূ। তুষারবাবু ও জয়শ্রীদেবী গতকাল মেয়েকে নিয়ে কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ডি-৩ সংরক্ষিত কামরার যাত্রী ছিলেন। রাত পৌনে ১১টা নাগাদ ট্রেন খালতিপুর স্টেশনে পৌঁছয়। স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াতেই এক দুষ্কৃতী ওই কামরায় হানা দেয়।

মৈত্রেয়ী জানান, তিনি দরজার কাছে একটি সিটে বসেছিলেন। হঠাৎ একটি ছেলে কামরায় উঠেই তাঁর হাত থেকে মোবাইল ফোন ও হাতব্যাগটি নিয়ে ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিনিও চিৎকার করে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। ওই ছেলেটি ট্রেনের নিচ দিয়ে ওপারে চলে যায়। তার পিছু নেন ওই যুবতি। কিন্তু অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ছিনতাইকারী গা ঢাকা দেয়। ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় তিনি সামান্য আঘাত পান। মৈত্রেয়ী জানান, ঘটনার সময় কামরায় কোনও পুলিশ ছিল না। পরে অবশ্য পুলিশ সেখানে আসে।

জয়শ্রীদেবী বলেন, ঘটনার সময় কামরায় লোক ছিল। মেয়ের চিৎকার শুনে তাঁর স্বামী মেয়ের পিছন পিছন ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। বেশ খানিকটা পর মেয়ে ও তাঁর স্বামী ফিরে আসেন। ততক্ষণে ট্রেনও ছেড়ে দিয়েছিল। পুলিশ ও কামরার যাত্রীরা চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করান। 

রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ ট্রেন মালদা স্টেশনে এসে পৌঁছলে তুষারবাবুরা GRP থানায় যান। সেখানে গোটা ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। খবর পেয়ে GRP থানায় উপস্থিত হন ইংরেজবাজার থানার IC পূর্ণেন্দু কুণ্ডুও। তিনিও সমস্ত ঘটনা শোনেন। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, এই ঘটনায় দুষ্কৃতী মালদা জেলার। তাই তাঁরা ওই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করতে রেল পুলিশকে সাহায্য করবেন। সেকারণেই খবর পেয়ে তিনি GRP থানায় বিষয়টি জানতে এসেছিলেন। 

এদিকে তুষারবাবু বলেন, মেয়ের যে কিছু হয়নি তাতেই তাঁর স্বস্তি। তিনি এবিষয়ে রেল পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সময় তাঁর মোবাইল ফোনটিও পড়ে গিয়েছিল। তিনি শুনেছেন, রেল পুলিশ সেটি উদ্ধার করেছে। তবে মেয়ের খোওয়া যাওয়া জিনিস এখনও উদ্ধার হয়নি। তার দুটি ফোন, দুটি চশমা সহ আরও কিছু জিনিসপত্র খোওয়া গেছে।