জলের অভাবে গলা শুকিয়ে কাঠ শিমলার, ঘরমুখো বহু পর্যটক


একফোঁটা জল পাওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে শিমলার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার।
জলের অভাবে শিমলার গলা শুকিয়ে কাঠ!

গত সাত দিন ধরে একফোঁটা জল মিলছে না শিমলার বাড়িতে বাড়িতে। হোটেলগুলির অবস্থাও তথৈবচ। জলের অভাবে হোটেল ছেড়ে বাধ্য হয়েই ঘরমুখো হচ্ছেন বহু পর্যটক। জলাভাবের খবর পেয়ে হোটেলের বুকিংও বাতিল করেছেন বহু পর্যটক।

সকাল হতে না হতেই শিমলা পুরসভার পাঠানো ট্যাঙ্কারের সামনে বালতি হাতে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে শিমলার বাসিন্দাদের। এক বালতি জলের জন্য কোথাও কোথাও আধ মাইল দীর্ঘ লাইন। জল নিয়ে কোথাও কোথাও বচসা থেকে পরিস্থিতি পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতেও গড়িয়েছে। নিয়মিত জল সরবরাহের দাবিতে শিমলা-কালকা রোড অবরোধও হয়েছে।

এটাই পর্যটকদের শিমলা যাওয়ার পছন্দের সময়। আর এই সময়েই জলের অভাবে গলা সবচেয়ে বেশি শুকিয়ে গিয়েছে শিমলার কাসুমপাত্তি, ছোটা শিমলা, বিকাশনগর, পাতিয়োগ, কাংরা ধর, নিউ শিমলা ও পাঠানঘাঁটি এলাকাগুলিতে।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, শিমলার মানুষের জলের চাহিদা মেটাতে রোজ গড়ে ৪২ কোটি লিটার জল সরবরাহের প্রয়োজন। দাবি, সেখানে এখন রোজ গড়ে ২২ কোটি লিটার জল সরবরাহ করা হচ্ছে।

শিমলার জলাভাব হিমাচল প্রদেশের হাইকোর্ট থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সকলের কপালেই ভাঁজ ফেলে দিয়েছে।

কেন এই জলাভাব, দূর করতে প্রশাসনের পদক্ষেপ কী কী, জানতে শিমলা পুরসভার পুর কমিশনার ও মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে তলব করেছে হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্ট। আদালতে শিমলা পুরসভা জানিয়েছে, শহরের তীব্র জল-সমস্যা মেটাতে ১৪টি জলের ট্যাঙ্কার ও ৮টি পিক-আপ ভেহিকল রাস্তায় নামালো হয়েছে।

তদারকি মুখ্য বিচারপতি সঞ্জয় করল ও বিচারপতি অজয় মোহন গয়ালকে নিয়ে গড়া শিমলা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ''শিমলা শহরের এই তীব্র জলাভাব আমাদের আরও একটা বিষয়ে ভাবিয়ে তুলেছে। তা হল, শিমলা পুরসভা এলাকায় নতুন আবাসন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া আর উচিত হবে কি না।''

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অশোক শর্মা আদালতে জানিয়েছেন, সমস্যা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর ও তাঁর সচিবালয় আপৎকালীন ব্যবস্থার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন।
জলের সুষম সরবরাহের জন্য হিমাচল প্রদেশ সরকার শিমলা শহরটিকে তিনটি জোনে ভাগ করেছে। নিয়মিত জল সরবরাহের জন্য শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে শিমলা পুরসভার তরফে আদালতে জানানো হয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সমস্যা মেটাতে তিনি অফিসারদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা বৈঠক করেছেন।

শিমলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, হোটেল আর ভিআইপি এলাকাগুলিতে নিয়মিত জল সরবরাহ বজায় রাখতে অন্য এলাকাগুলিতে জল সরবরাহে ব্যাপক কাটছাঁট করছে শিমলা পুরসভা।