কালী সাজায় যুবককে ঠাট্টা, শেষে ছুরি মেরে খুন!


এলাকার লোকজন তাঁকে 'কালী ভক্ত' হিসেবেই জানতেন। ফি মঙ্গল ও শনিবার তাঁকে দেখাও যেত 'কালী'র বেশে ঘুরে বেড়াতে। ওই দু'দিন নিজেকে 'কালী' হিসেবেও পরিচয় দিতেন। কালো রঙের সালোয়ার। তার ওপর লাল ওড়না জড়ানো আর নূপুর পরা। অনাথ কালুকে এ ভাবেই ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত দিল্লির কালকাজি মন্দির এলাকায়। গত বুধবার ওই এলাকারই একটি জঙ্গল থেকে কালুর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহে ছুরির একাধিক ক্ষত। গোটা দেহ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। রবিবার কালুর খুনি সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। সঙ্গে আটক করা হয়েছে তিন জনকে নাবালককেও।

এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, কালকাজিতেই একটি ধর্মশালায় বড় হয়েছেন কালু। কালুর পরিবার বলতে একটি ভাই রয়েছেন। ওঠাবসা ছিল এলাকার রূপান্তরকামীদের সঙ্গে। সেখানেই বেশির ভাগ সময় কাটাতেন।

সোমবার ডিসিপি (দক্ষিণ-পূর্ব) চিন্ময় বিসওয়াল জানিয়েছেন, কালুর খুনিদের খোঁজে এলাকার একাধিক লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে কালুকে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন তাঁরা। রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দেন গোবিন্দপুরীতে। সেখান থেকেই চার জনকে গ্রেফতার ও তিন নাবালককে আটক করা হয়েছে। ধৃত চার জনের নাম নবীন, আমনকুমার সিংহ, মোহিত কুমার এবং সজলকুমার মহেশ্বরী। তাদের সকলের বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। জেরায় কালুকে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।

অভিযুক্তরা জানিয়েছে, ঘটনার দিন এলাকায় একসঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল তারা। সেখান দিয়ে সালোয়ার-কামিজ পরা কালু যেতে দেখে ঠাট্টা-ইয়ার্কি শুরু করে। প্রতিবাদ জানায় কালু। তাতেই রেগে গিয়ে কালুকে টেনে নিয়ে যায় জঙ্গলের ভিতরে। চলে বেধড়ক মারধর। এর পর একটি ছুরি দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে কালুর মুখে, মাথায়, বুকে। ছুরির আঘাতে কালুর রক্তক্ষরণ শুরু হতেই সেখান থেকে মোটরবাইকে চেপে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে সেখানেই মারা যায় কালু।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের পাঁচটি মোটরবাইকও আটক করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে নবীন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেও জানা গিয়েছে।