ব্যবসায়ীদের নিয়ে গবেষণা, মুনাফা বাড়লে মিলবে নম্বর


বঙ্গের প্রতি একদা সদয় ছিলেন বাণিজ্যলক্ষ্মী। সেই সমৃদ্ধির দিন হয়তো গিয়েছে। তবে শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে শিক্ষার মেলবন্ধন ঘটিয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ শুরু হয়েছে নতুন ভাবে। এ বার ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের খুঁজে বার করে পড়ুয়াদের নম্বর তোলার ব্যবস্থা করছে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ছাত্রছাত্রীদের গবেষণার প্রধান বিষয়ই হবেন ওই সব বাণিজ্যসফল ব্যক্তি। এবং ওই ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিয়ে ব্যবসায় আরও উন্নতি ঘটাতে পারলে মিলবে বাড়তি নম্বরও। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি রাজ্যের সব সরকারি ও বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট কলেজে এই মর্মে নির্দেশ পাঠিয়েছেন।

বেশি করে পেশামুখী পাঠ্যক্রম চালু করেছে ম্যাকাউট। কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজে একসঙ্গে ১৯টি পাঠ্যক্রম চালু হয়েছে। তা ছাড়াও নতুন পাঠ্যক্রমে সমাজের সঙ্গে পড়ুয়াদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বাড়াতে বেশ কয়েক দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বার একেবারে সমাজের নির্দিষ্ট ব্যক্তিদেরই পাঠ্যক্রমে তুলে আনল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।


সমাজের সঙ্গে যোগ

• এলাকায় ব্যবসা-সফল ব্যক্তিদের খোঁজ।

• ব্যবসায় তাঁদের উত্থানের তথ্য সংগ্রহ।

• ব্যবসায় উন্নতির জন্য তাঁদের পরামর্শ দান।

• ব্যবসায় লাভ হলে বাড়তি নম্বর পড়ুয়াদের।

সূত্র: মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র জানান, প্রতিটি কলেজ প্রধানদের বলা হয়েছে, আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা পড়ুয়াদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। সেখান থেকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিদের খুঁজে বার করতে হবে ছাত্রছাত্রীদেরই। তাঁরা সামান্য মুদি দোকানি থেকে শুরু করে জামাকাপড়ের ব্যবসায়ী বা পোলট্রি— যে-কোনও রকমের ব্যবসায়ী হতে পারেন। প্রথমে তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। তার পরে তাঁদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য সংগ্রহ করে মূল্যায়ন করতে হবে, কী ভাবে তিনি বা তাঁরা ব্যবসায় সফল হলেন। তার ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করতে হবে পড়ুয়াদের। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শ দিতে হবে। ওই ব্যক্তির মুনাফা বাড়াতে পারলে মিলবে বাড়তি নম্বর। এই কাজে পড়ুয়াদের সঙ্গে থাকবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। কলেজের এই কাজকর্মের উপরে নজর রাখবে বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, এখন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলির অন্যতম মূল লক্ষ্যই হল ক্যাম্পাসিং। সেই অনুযায়ী পড়ুয়াদের পেশামুখী করে তুলতে সমাজের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয়। সেই জন্য চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই অভিজ্ঞতা অর্জনের পথ প্রশস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।

''গোটা সমাজটাই শেখার জায়গা। সমাজকে উপকৃত করা এবং সমাজ থেকে শিক্ষার রসদ নেওয়াই হচ্ছে আসল শিক্ষা। পড়ুয়ারা যাতে সেই কাজ করতে পারে, সেই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে,'' বললেন উপাচার্য।