তরুণ প্রজন্মকে টানতে উদ্যোগী বিএসএফ


কোনওটা থেকে এক মিনিটে একসঙ্গে ১২০০ রাউন্ড গুলি বেরোতে পারে, কোনওটা আবার প্রায় সাড়ে পাঁচ কিমি দূরে থাকা শক্রপক্ষের ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে পারে চোখের নিমেষে। সামিয়ানার নীচে টেবিলে পরপর সাজানো এমনই বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র। তা হাতে নিয়ে নেড়েচে়ড়ে দেখছে স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ। কেউ আবার সেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ছবিও তুলছেন। হাসিমুখে আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে বুঝিয়ে দিচ্ছেন জলপাই রঙের উর্দিধারী সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানেরা।

কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন স্কুল-ক্লাবের আবেদনে সাড়া দিয়ে নিজেদের অস্ত্রভান্ডার নিয়ে এ ভাবেই পৌঁছে যাচ্ছে বিএসএফ। সম্প্রতি উত্তর শহরতলির বরাহনগর পুরসভার ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে এমনই এক প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছিল। সেখানে মর্টার, মিডিয়াম মেশিনগান, স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেড লঞ্চার সিস্টেম, স্নাইপার রাইফেল, লাইট মেশিনগান-সহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও ছিল ইজরায়েলে তৈরি অত্যাধুনিক এক্স-৯৫ অ্যাসল্ট গান। কোন অস্ত্রের বৈশিষ্ট্য কী, তা-ও দর্শকদের বুঝিয়ে দেন জওয়ানেরা। তবে শুধু দেখাতেই এই প্রদর্শনী নয় বলে জানান বিএসএফ জওয়ানেরা। বরং স্কুলপড়ুয়া থেকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশাত্মবোধ তৈরি করে বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ বাড়াতে এই প্রদর্শনী, জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএসএফ-এর ৭৬ ব্যাটেলিয়নের ডেপুটি কমান্ডান্ট নিজামু্দ্দিন।

মানুষের সঙ্গে আরও জনসংযোগ বাড়াতে এবং সামরিক বাহিনীতে যোগদানে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে ভারতীয় সেনাবাহিনীও বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করে। আধা সামরিক বাহিনী হিসেবে বিএসএফ তার ব্যতিক্রম নয়। নিজামু্দ্দিন আরও জানান, তরুণ প্রজন্মকে বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী করার পাশাপাশি বিএসএফ সম্পর্কে মানুষের ধারণা আরও বাড়াতে এমন প্রদর্শনীর পরিকল্পনা। সাধারণত সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি চালান বিএসএফ জওয়ানেরা। কিন্তু 'লাইন অব কন্ট্রোল'-এ কোন পরিবেশে কী ভাবে শত্রুপক্ষের মোকাবিলা করা হয় কিংবা দেশকে বাঁচাতে কেমন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন জওয়ানেরা— তা জানেন না সাধারণ মানুষ। সে সব দেখাতেই এই উদ্যোগ।

বিএসএফ-এর তরফে নিজামু্দ্দিন জানান, আগে বিএসএফ-এ পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল মহিলাদের জন্য। এখন বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে।