আট কোটির হাঁস প্রজনন খামার কল্যাণীতে


মুরগি আছে। আছে কোয়েল, টার্কিও। সেই সঙ্গে চিন দেশের 'হোয়াইট পিকিং' হাঁসের মাংসের চাহিদাও বাড়ছে রাজ্যের বাজারে। হোটেল, রেস্তরাঁ তো বটেই, বাড়ির হেঁশেলে ফি-বছর বেড়ে চলেছে হাঁসের মাংসের কদর। সেই চাহিদা সামাল দিতে হাঁসের খামার গড়ছে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নিগম। কল্যাণীতে পাঁচ হাজার হাঁস এনে এই প্রথম একটি প্রজনন খামার গড়া হচ্ছে। তাতে খরচ হবে আট কোটি টাকা।

গত আর্থিক বছরে শুধু সরকারের হরিণঘাটা বিপণন কেন্দ্রগুলি থেকে পাঁচ টন হাঁসের মাংস বিক্রি হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসেই ওই মাংস বিক্রি হয়েছে গড়ে ৬০০ কিলোগ্রাম করে। অক্টোবরের পর থেকে শীত যত এগিয়ে আসে, হাঁসের মাংসের চাহিদা আরও বাড়তে থাকে। কারণ, শীতে মানুষের বাড়তি ওমের দরকার হয়। হাঁসের মাংস মানবদেহে সেই বাড়তি উত্তাপ জোগাতে পারে। তাই শীতের সময় অনেকেই এই মাংস পছন্দ করেন। ইদানীং কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের ছোট-বড় শহরের হোটেল-রেস্তরাঁয় হাঁসের সুস্বাদু মাংসের নানা পদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবং শুধু শীতকালে নয়, তার চাহিদা সারা বছরই। তাই ব্যবসা বাড়াতে নিজস্ব খামার তৈরি করছে সরকার।

নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌরীশঙ্কর কোনার বলেন, ''এখন হোয়াইট পিকিং হাঁসের বাচ্চা ওড়িশা বা বেঙ্গালুরু থেকে এ রাজ্যে নিয়ে এসে চাষিরা তাদের লালনপালনের পরে বিক্রি করে দেন। রাজ্যে সংগঠিত উদ্যোগে এমন কোনও বড় খামার নেই, যেখান থেকে ওই হাঁসের বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে।'' তিনি জানান, কল্যাণীর খামারে পাঁচ হাজার হাঁস থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ বাচ্চা হবে। সেই বাচ্চা চাষিদের দিয়ে পরে আবার মাংসের জন্য কিনে নেওয়া হবে। ফলে রাজ্যে হাঁসের মাংসের জোগান অনেকটাই বাড়বে।

নিগম সূত্রের খবর, খামারটি গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে হোয়াইটি পিকিং হাঁসের সঙ্গে 'খাকি ক্যাম্পবেল' প্রজাতির বেশ কিছু হাঁসও রাখা হবে। মূলত এই হাঁসের ডিম বিক্রি করা হবে বাজারে। খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস মোটামুটি ছ'সপ্তাহ পর থেকে ডিম পাড়ে এবং বছরে কমপক্ষে ৩০০ ডিম দিতে পারে।

প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ''মুরগির মাংস ও ডিমের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা বেশ কয়েকটি খামার গড়ে তুলছি। এ বার হাঁসের মাংস ও ডিমের জোগান বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য। কল্যাণীর প্রকল্পটি আমাদের প্রথম পদক্ষেপ।''