একজোড়া কানের দুল বিক্রি হলো কোটি টাকায়!


মহারানি জিন্দ কউর।

ভারতের কোহিনূর তো সেই কবেই নিয়ে গিয়েছিল ইংরেজরা। এবার জানা গেল এক জোড়া সোনার দুলের কথা, যা সম্প্রতি নিলামে ওঠে সে দেশ থেকেই।

বিশ্বের সুপরিচিত ও অন্যতম বৃহৎ নিলামঘর বনহ্যামস, তার যাত্রা শুরু করেছিল ১৭৯৩ সালে। ফাইন আর্ট, অ্যান্টিক, গয়না, এমনকী পুরনো দিনের গাড়ি— সব কিছুই অকশন হয় এই নিলাম ঘরে। ব্রিটেনের এই বেসরকারি অকশন হাউজ বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন নিলামঘরও বটে। 

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে, এই বনহ্যামস থেকেই নিলাম হয়েছে এক জোড়া সোনার দুল। সংস্থার টুইটার পেজ থেকে জানা গিয়েছে যে, দুল জোড়া ১৮ লক্ষ থেকে ২৭ লক্ষ টাকায় নিলাম হবে বলে ভেবেছিল বনহ্যামস। কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে তার দাম ওঠে ১.৬২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ধার্য দামের প্রায় কয়েক গুণ বেশি। 

সোনার এই দুল জোড়া ছিল পঞ্জাবের শেষ মহারানি জিন্দ কউরের। ১৯ শতকের শিখ সাম্রাজ্যের শাসক, মহারাজা রঞ্জিত সিংহের সর্বকনিষ্ঠ রানি ছিলেন জিন্দ কউর। এবং সাম্রাজ্যের শেষ শাসক, দলীপ সিংহের মা।

মহারাজা রঞ্জিত সিংহের মৃত্যুর সময়, সহমরণে গিয়েছিলেন তাঁর চার স্ত্রী ও সাতজন উপপত্নী। স্বভাবতই, সিংহাসনে বসেন একমাত্র উত্তরাধিকারী, জিন্দ কউররের একমাত্র ছেলে দলীপ সিংহ। কিন্তু, ছোট্ট রাজার বয়স তখন মাত্র পাঁচ বছর। তাই রাজ্য শাসনের ভার সামলাতে শুরু করেন মহারানি নিজেই।

বনহ্যামস-এর টু‌ইটার পেজ থেকে
শুধু রূপেই নয়, জিন্দ কউর যে সুশাসক ছিলেন, তা বোঝা গিয়েছিল ইংরেজদের তাঁর প্রতি ভীতি থেকেই। প্রসঙ্গত, তাঁকে তুলনা করা হয় রোমের ভ্যালেরিয়া মেসালিনার সঙ্গে। রাজনীতি, কূটনীতি এবং যুদ্ধনীতিতে পারদর্শী এই নারীকে তাই বলা হয় 'মেসালিনা অফ দ্য পঞ্জাব'। 
১৮৬৩ সালে, ব্রিটেনের কেনসিংটনে ঘুমের মধ্যেই মারা যান জিন্দ কউর। এবং অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তাঁর পৌত্রী, রাজকুমারী বাম্বা সাদারল্যান্ড, তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে যান লাহৌরে। মহারাজা রঞ্জিত সিংহের সমাধির পাশেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।