নোবেল বর্জন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ! ফের বেলাগাম বিপ্লব


কাজে না হোক, নিজের কথায় অন্তত 'বিপ্লব' ঘটিয়ে চলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। কখনও তাঁর মন্তব্যে হাসির রোল উঠেছে। কখনও বা চোখ কপালে ঠেকেছে। তবুও দমেননি তিনি। ফের এক বার অবাক করলেন বিপ্লব। এ বার তাঁর মন্তব্য: "ইংরেজদের বিরোধিতায় নোবেল বর্জন করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।" বুধবার রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে ব্যঙ্গের পাশাপাশি সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

উদয়পুরের পুরনো রাজবাড়িতে ভুবনেশ্বরী মন্দিরের চত্বরে শুরু হয়েছে রাজর্ষি উৎসব। গত কাল তারই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লব। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, "ইংরেজ সরকারের বিরোধিতা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার বর্জন করেছেন|"

তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক বার এমন বাক্য-বিভ্রাট ঘটিয়েছেন বিপ্লব। কখনও বলেছেন, ''মহাভারতের যুগেও ইন্টারনেট ছিল। তা না হলে সঞ্জয় কী ভাবে ধৃতরাষ্ট্রকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের ধারাবিবরণী দেবেন?'' আবার কখনও বা তাঁর পরামর্শ, "সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদেরই সিভিল সার্ভিসে যাওয়া উচিত। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের নয়।" নতুন প্রজন্মের কাছে নিজস্ব ভঙ্গিতে তাঁর পরামর্শ ছিল, "চাকরির বদলে গরুর দুধ বিক্রি করলে ১০ বছরের মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার মালিক হয়ে যাবেন।" প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী ডায়না হেডেনকে নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ, "ডায়না হেডেন এমন কিছু সুন্দরী নন যে তাঁকে বিশ্বসুন্দরী করতে হবে!" এ ভাবে একের পর এক বেলাগাম মন্তব্যে দেশ জুড়েই হাসির খোরাক হয়েছেন তিনি। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। তবু তাঁর অকপট মন্তব্যের রেশ থামেনি।

নিজের মন্তব্য অবিচল থাকলেও বিপ্লবকে বিঁধতে ছাড়েননি বিরোধীরা। কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা মুখপাত্র তাপস দে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, যে বিষয়ে ভাষণ দিতে যাবেন তা নিয়ে আগে থেকে জেনে বা পড়াশোনা করে গেলে ভাল হয়। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এই বক্তব্যটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।" তাপস দে-র আরও মন্তব্য, "ওঁর ভাষণে প্রতিক্রিয়া দিতে লজ্জাবোধ হয়।" কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখর হলেও মুচকি হেসে প্রসঙ্গ এড়িয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর। তবে এই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা মুখপাত্র গৌতম দাশ বলেন, "মূর্খামিরও একটা সীমা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই সমস্ত মন্তব্য করে তিনি মূর্খামির সীমা পার হয়ে গিয়েছেন। সর্বশেষ স‌ংযোজনটি হল রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী এই সব হাস্যকর মন্তব্য করে ত্রিপুরার মানসম্মান ডোবাচ্ছেন| তবে বিরোধীরা সমালোচনায় বিঁধলেও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র মৃণালকান্তি দেব।