ভোট মিটতেই ফিরল পচা মাংসের আতঙ্ক!


শনিবার রাতে এলাকার স্থানীয় বেশ কিছু যুবক বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎই তাঁরা লক্ষ্য করেন, শহরের বাইরে থেকে মোহনপুর রোড হয়ে একটি টেম্পো জগন্নাথ মন্দির চক এলাকায় এসে দাঁড়ায়।

ভোট মিটতেই ফের পচা মাংসের আতঙ্ক ফিরল। তবে এবারে শুধু মাংসই নয়, সঙ্গে ধরা পড়ল পচা ডিমও। ঘটনার জেরে ফের মাংস আতঙ্ক গ্রাস করেছে মেদিনীপুর শহরকে।

শনিবার গভীর রাতে একটি টেম্পো ভর্তি পচা ডিম ও পচা মাংস আটক করলেন মেদিনীপুর শহরের স্থানীয় বাসিন্দারা। শহরে ঢোকার পথেই আটক করা হয় টেম্পোটিকে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত প্রায় বারোটা নাগাদ শহরের জগন্নাথ মন্দির চক এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোহ, টেম্পোর মধ্যে কয়েক ড্রাম ভর্তি পচা মাংস, ডিম-সহ অন্যান্য খাবার ছিল।

শনিবার রাতে এলাকার স্থানীয় বেশ কিছু যুবক বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎই তাঁরা লক্ষ্য করেন, শহরের বাইরে থেকে মোহনপুর রোড হয়ে একটি টেম্পো জগন্নাথ মন্দির চক এলাকায় এসে দাঁড়ায়। এলাকার চৌমাথা মোড় থেকে টেম্পোটি কোন দিকে যাবে তা নিয়ে বিভ্রান্ত ছিল চালক। তখন ওই যুবকরা এগিয়ে এসে ওই টেম্পোর চালকের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান তিনি কোথায় যাবেন। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরে গাড়ির চালক ও খালাসি কেউই কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি বলে জাবি। 

চালক ও খালাসির আচরণে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়রা ওই চালক ও খালাসিকে আরও কিছু প্রশ্ন করতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর তাঁরা টের পান টেম্পো থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। গাড়িতে কী রয়েছে জিজ্ঞেস করতেই চালক ও খালাসি গাড়ি ছেড়ে পালায়। এর পরই স্থানীয়রা টেম্পোর পেছনের ঢাকা খুলে দেযন। বেরিয়ে আসে বহু পচা মুরগি ও পচা ডিম যা প্লাস্টিকের বিভিন্ন বড় বড় ড্রামের মধ্যে রাখা ছিল। 

স্থানীয়রা অনুমান, কোনও হোটেল বা রেস্তোরাঁয় পচা মাংস জোগান দেওয়ার জন্য টোম্পোটি যাচ্ছিল।  তারপর টেম্পো থেকে মাল নামিয়ে রাস্তায় পচা মাংস ঢালা হয়। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ছুটে আসে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। কিন্তু পুলিশ পচা মাংস ও পচা ডিম উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে এই বচসা চলতে থাকে। প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। শেষপর্যন্ত পুলিশ সেগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

টেম্পো করে পচা মাংস ও ডিম সরবরাহের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় কংগ্রেসের কাউন্সিলর সৌমেন খান বলেছেন, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এত কিছুর পরেও শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিতে পচা মাংস ও পচা ডিম সরবরাহ চলছে। এই বিষয়ে তৎপর হওয়া দরকার। তবে এই ঘটনা নিয়ে পুরকর্তারা মুখ খোলেননি।

উল্লেখ্য, গত এক মাসে মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁতে মেদিনীপুর পুরসভার পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গা থেকেই পচা মাংস ও খাবার উদ্ধার হলেও শুধুমাত্র হুঁশিয়ারি দিয়েই ছেড়ে দিয়েছিল পুরসভা।