জুতোয় খাবার পরিবেশন করা হল জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে!


খাবার টেবিলে বসে সস্ত্রীক ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। উল্টো দিকে অতিথি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁদের সামনে সাজানো চারখানি জুতো! যাতে আসলে পরিবেশন করা হয়েছে ডেজার্ট।
রবিবার সগর্বে এই ছবিটি নিজের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন ইজরায়েলের তারকা শেফ সেগেভ মোশে। আর তা দেখেই আঁতকে উঠেছেন জাপানের কূটনীতিকেরা। প্রশ্ন উঠছে, জুতোয় করে খাবার পরিবেশনের এই ভাবনা কি শৈল্পিক চমক, নাকি নিছকই মজা! এক জাপানি কূটনীতিকের মতে, ''কোনও সংস্কৃতিতেই খাবার টেবিলে জুতো রাখাকে ভাল নজরে দেখা হয় না। ওই শেফ কী ভেবে এটা করেছেন, জানি না। বিষয়টা আদৌ মজার নয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেই মনে করছি।''

ঘটনাটি অবশ্য দিন কয়েক আগের। ২ মে, অর্থাৎ গত বুধবার জেরুসালেমে দুই দেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর রাজকীয় ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। এটা ছিল ইজরায়েলে আবের দ্বিতীয় সফর। সে দিন রান্নার দায়িত্বে ছিলেন শেফ মোশে। একের পর এক তাক লাগানো খাবার পরিবেশন করে চমকে দিতে চেয়েছিলেন অতিথিদের। শেষপাতে দেশ বিদেশের বাছাই করা চকোলেট জুতোয় ভরে পরিবেশনের ভাবনাটি তাই প্রথম থেকে গোপন রেখেছিলেন তিনি। রবিবার সেই অভিনব ডেজার্টের আরও একটি ছবি পোস্ট করেছেন মোশে। জানিয়েছেন, জুতোটি আসল নয়, ধাতুর তৈরি। ব্রিটিশ শিল্পী টম ডিক্সন সেটি তৈরি করেছেন। তবে সেই ভাবনা যতই অভিনব হোক না কেন, সমালোচনা পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইজরায়েলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের কথায়, ''জাপানি সংস্কৃতিতে জুতোকে নীচু নজরেই দেখা হয়। ওঁরা বাড়িতে, এমনকি অফিসেও জুতো পরেন না। জাপানের মানুষ তাই ঘটনাটিকে অপমানজনক বলে মনে করতেই পারেন।''

ছবিটি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও হইচই শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, জুতোয় ডেজার্ট পরিবেশনের আগে অতিথিদের সংস্কৃতি নিয়ে একটু জ্ঞানগম্যি বাড়ানো প্রয়োজন ছিল শেফের। কারও কারও সুর আরও কড়া। তাঁদের মতে, এর জন্য কোনও সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন নেই। সাধারণ জ্ঞান থাকলেই হয়।
জুতো বিতর্কে নেতানিয়াহু মুখ খোলেননি। সরকারি তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, ''জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে আমরা শ্রদ্ধা করি।''