‘স্যর, যাবেন না প্লিজ…’, পড়ুয়াদের কাতর আবেদনে চোখে জল শিক্ষকের


প্রিয় শিক্ষক চলে যাচ্ছেন। খবরটা পেয়েই আর স্থির থাকতে পারেনি পড়ুযারা। সরকারি নিয়ম। তাই যেতেই হবে। তবু শিক্ষক গেট থেকে বেরনোর মুহূর্তেই গড়ে উঠল মানবপ্রাচীর। হাতে হাত রেখে ঘিরে দাঁড়াল খুদে পড়ুয়ারা। চোখে জল আর কাতর আবেদন, স্যর, যাবেন না প্লিজ। সে আর্তি শুনে তখন চোখে জল শিক্ষকদেরও।

তামিলনাড়ুর একটি সরকারি হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতেন জি ভগবান। তরুণ শিক্ষক। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে দারুণ দোস্তি। ইংরেজি পড়াতেন তিনি। তবে শিক্ষকের থেকেও বেশি তিনি পড়ুয়াদের বন্ধু। অবসর সময়ে তাদের গল্প শোনাতেন। কার বাড়িতে কী অবস্থা সব খোঁজখবর রাখতেন। কার কীসে অসুবিধা-সুবিধা তা তাঁর নখদর্পণে। পড়ুযারাও তাই মন খুলে শিক্ষককে বলতে পারত সব কথা। ভালও বাসত। সেই শিক্ষক চলে যাচ্ছে দেখে আর বসে থাকতে পারেনি তারা। হাতে হাত রেখে তৈরি করেছে মানবপ্রাচীর। চোখের জলে আবেদন করেছেন, বলেছে, স্যর যাবেন না। কিন্তু কেন চলে যেতে হচ্ছে স্যরকে? আসলে যে স্কুলে ভগবান চাকরি করতেন ছাত্র অনুপাতে সেখানে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। তাই শিক্ষক কম এমন স্কুলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। কিন্তু প্রিয় শিক্ষকের সঙ্গে বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছে না কেউই। পড়ুয়াদের এই অবস্থা দেখে কাতর শিক্ষকও। ছাত্রদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চোখেও জল। তবু, চলে তো যেতেই হবে। সরকারি নিয়ম যে এটাই।

এ ছবি তাও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। হাল আমলে শিক্ষাও নাকি ব্যবসা হয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার পড়ুযাদের শাস্তি দিতেও ভয়ে ভয়ে থাকেন শিক্ষকরা। কারণ হাজারো নিয়মের কড়াকড়ি। ফলে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাধুর্যটাই যেন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ ছবি প্রমাণ করল, এ মহাবিশ্বে কোথাও কিছু হারায় না। অন্তরের জিনিস থেকে যায় অন্তরেই।