স্বপন কোলে হত্যা মামলায় ১৩ জন বেকসুর খালাস


কলকাতা ও হাওড়া: আট বছর পর মামলার রায়দান৷ আন্দুলের প্রভু জগবন্ধু কলেজের ছাত্র স্বপন কোলে হত্যা মামলায় ১৩জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করল আদালত৷ হাওড়ার সেকেন্ড ফাস্ট ট্র‍্যাক কোর্ট এই রায় দেয়৷ আদালতসূত্রে খবর, উপযুক্ত সাক্ষ্য না থাকায় মুক্তি পায় অভিযুক্তরা৷

২০১০ সালে ১৬ ডিসেম্বর৷ কলেজের মনোনয়নপর্ব ঘিরে সংঘর্ষে জড়ায় এসএফআই ও টিএমসিপির সদস্যরা৷ সেই সংঘর্ষে আহত হন বিকম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এসএফআই সদস্য স্বপন কোলে৷ তাঁর মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে৷ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন স্বপন৷ গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর৷

এই ঘটনা ঘিরে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি৷ এই ঘটনায় তৃণমূল সমর্থিত ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে৷ এর মধ্যে নাম ছিল বর্তমানের হাওড়া জেলা তৃণমূলের ক্রীড়া সেলের সভাপতিরও৷
 
পুলিশ ১৩ জনকেই গ্রেফতার করে৷ হাওড়ার অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদির নেতৃত্বে শিলিগুড়ি এবং বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের৷ ২০১২ সালে ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ৷

ঘটনার তদন্তে যেন কোনও গাফিলতি না থাকে তার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ দীর্ঘ আট বছর শুনানির পর মঙ্গলবার হাওড়া আদালতের বিচারক নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী তৃণমূল নেতা তুষার ঘোষ-সহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলায় উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে সকলকে বেকসুর খালাস করে দেন৷

হাওড়া আদালতের পিপি ইনচার্জ রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা ও তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাণ হারান স্বপন কোলে৷ পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল৷ ১৪ জন সাক্ষী দেয় এই মামলায়৷ কিন্তু উপযুক্ত সাক্ষ্যের অভাবে ১৩ জন অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত৷

বেকসুর খালাস পেয়ে তৎকালীন সাঁকরাইল ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি (বর্তমানে হাওড়া জেলা তৃণমূলের ক্রীড়া সেলের সভাপতি) তুষারকান্তি ঘোষ বলেন, ''এই জয় সত্যের জয়৷ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল আমাদের বিরুদ্ধে৷ আমরা আদালতের প্রতি ভরসা রেখেছিলাম৷ জানতাম সত্যের জয় হবেই৷''

এই ঘটনায় প্রথমে তিনজনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল৷ পরে আরও দশজনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়৷ বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রায় সকলের জামিনের আবেদনই মঞ্জুর করে আদালত৷ অবশেষে রায়দান হল সেই মামলার৷