প্রবল বৃষ্টিতে কেরলে মৃত ৫৩


বৃষ্টিতে বেহাল কেরল। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এখনও পর্যন্ত প্রবল দুর্যোগের বলি হয়েছেন অন্তত ৫৩ জন। নিখোঁজ অনেকে।

তিরুঅনন্তপুরম আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, তিরুঅনন্তপুরম ও কোল্লাম জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টিপাত হবে। সেই সঙ্গে চলবে ঝোড়ো হাওয়াও। আজ সকাল থেকেই তিরুঅনন্তপুরমে শুরু হয়েছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এ দিন সকালের উপগ্রহ চিত্র দেখা যায়, পশ্চিম উপকূল বরাবর বৃষ্টির মেঘ ঘনীভূত হয়েছে। কন্যাকুমারী থেকে কেরল, কর্নাটক ও কোঙ্কন উপকূল হয়ে ওই মেঘ মুম্বই পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

প্রবল ঝড়-বৃষ্টির জেরে জায়গায় জায়গায় শুরু হয়েছে ধস এবং হড়পা বান। যার জেরে কোঝিকোড়, ওয়েনাড, কান্নুর, পালাক্কড়, মালাপ্পুরম, কাসরগোড় জেলায় আগেই সতর্কতা জারি করেছিল রাজ্য। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বেশির ভাগ নদী। কোঝিকোড়ের কাক্কায়াম জলাধার এবং তিরুঅনন্তপুরমের নেইয়ার বাঁধ এলাকার কাছাকাছি থাকা মানুষজনকে সতর্ক করেছে প্রশাসন। ওই সব জেলার নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও ফসল।

প্রশাসন সূত্রে খবর, কোঝিকোড় জেলায় বৃহস্পতিবার ধসে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। এদের মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের তিনটি শিশু। আর ওই জেলাতেই নদীতে পড়ে মারা গিয়েছেন এক জন। শুক্রবার আরও দু'টি দেহ উদ্ধার হয়েছে কোঝিকোড়েই। কাদার ধসের স্তূপ থেকে মিলেছে দেড় বছরের শিশুকন্যার দেহ। খোঁজ নেই তার মায়ের। আর হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে সতেরো বছর বয়সি এক কিশোর। গত দু'দিনের ভারী বৃষ্টিতে রাজ্যের উত্তরের জেলাগুলিও বিপর্যস্ত। সেখানে নিখোঁজ প্রায় ১৮ জন। নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।

উদ্ধারে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ত্রাণশিবিরে যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের জন্য ওষুধ, খাবার, পানীয় জল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্যায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিয়ো-কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি। তবে কেরল বিধানসভার বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নিথালা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে গিয়ে দুর্গতদের জন্য সরকারের কাছে বিশেষ প্যাকেজের দাবি জানান।