ভাড়া বৃদ্ধি এক টাকা, হচ্ছে না বাস ধর্মঘট



চার বছর পরে বেসরকারি বাস-মিনিবাসের ভাড়া বাড়াল রাজ্য সরকার। প্রতি স্তরে বাসের ভাড়া বাড়বে ১ টাকা। সেই সঙ্গে ট্যাক্সি ও জলপথ পরিবহণেও ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জ্বালানির চড়া দামের কারণে ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বাস-মিনিবাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল মালিক সংগঠনগুলি। এই অবস্থায় বুধবার বাসমালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোচনা করে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে। পরিবহণমন্ত্রীর বক্তব্য, ''স্বেচ্ছায় নয়, কেন্দ্রের নীতির জন্য বাধ্য হয়ে ভাড়া বাড়াতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।'' বাস-মিনিবাসের মতো ট্যাক্সি এবং নৌ পরিবহণের ক্ষেত্রেও ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে দু'-এক দিনের মধ্যেই।

ডিজেলের দাম কমলে যাতে বাসভাড়া আনুপাতিক হারে কমানো যায় সে জন্য নির্দিষ্ট পন্থা খুঁজে বার করা হবে বলেও জানান পরিবহণমন্ত্রী। পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বধীন একটি কমিটিকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।



সরকারের সিদ্ধান্ত জেনে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিলেও ভাড়া বৃদ্ধির হার নিয়ে অসন্তুষ্ট বাসমালিকরা। 'জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট'-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ভাড়ার স্তর নিয়ে সংশয় আছে। সরকারি নির্দেশিকা না দেখে বলতে পারছি না।'' বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি দীপক সরকার বলেন,
"আশাহত। পরিষেবা দেওয়ার খরচ এর চেয়ে অনেক বেশি।'' বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সভাপতি রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''২০১৪ সালে যে ভাড়া দাবি করেছিলাম, তাতেই পৌঁছনো গেল না। বাসপিছু খরচ বেড়েছে ৪০%। নতুন ভাড়ায় বড়জোর মিলবে ১৬%।''

বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেছেন, ''এত দিন মালিকেরা আবেদন-নিবেদন করলেও ভাড়া বাড়েনি। এখন জ্বালানির দাম বাড়তেই ভাড়া বাড়িয়ে দায়টা কেন্দ্রের উপরে চাপাতে চায় সরকার।'' সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী বলেন, ''তৃণমূল সরকার পেট্রল-ডিজেলে কর বসিয়েছে। তা প্রত্যাহার না করে ভাড়া বাড়িয়ে মানুষের বোঝা বাড়াল।'' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ''লোকাল ট্যাক্স বা ভ্যাট না-কমিয়ে বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হল মানুষের উপর।''