মদ ছেড়ে দুধ খাচ্ছে বিহারের মানুষ!


পটনা: বিহারে মদে নিষেধাজ্ঞা জারির পর  অপচয় বাঁচছে।  উদ্ধৃত্ত অর্থ বিহারে দামী জামাকাপড় ও খাদ্যপণ্য কেনার কাজে খরচ হচ্ছে। মদ নিষিদ্ধ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে দামী শাড়ির বিক্রি ১.৭৫১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। মধুর ব্যবহার বেড়েছে ৩৮০ শতাংশ। চিজ কেনার  হার বেড়েছে ২০০ শতাংশ। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় এমনই দাবি করা হয়েছে।
বিখ্যাত থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়ান ডেভেলাপমেন্ট রিসার্চ ইন্সস্টিটিউট (এডিআরআই) এবং সরকারি-অর্থ সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ডেভেলাপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইন্সস্টিটিউট (ডিএমআই)-এর এই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে যে, মদের পিছনে যে অর্থের অপচয় হত, তা দিয়ে ১৯ শতাংশ পরিবারই গৃহস্থালির নতুন জিনিসপত্র কিনেছে।

২০১৬-র এপ্রিলে বিহারে মদ নিষিদ্ধ হয়। এই নিষেধাজ্ঞার ফলাফল যাচাইয়ের জন্য এই দুটি সমীক্ষা চালায় সরকার। সমীক্ষার রিপোর্ট আর্থিক সমীক্ষার সঙ্গে সংযুক্ত করে রাজ্য বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে।

এডিআরআই বিহার দুগ্ধ সমবায় ফেডারেশন (কোমফেড)-এর খুচরো বিক্রির দোকানগুলিতে ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখে। সমীক্ষায় দেখা যায়, মধুর বিক্রি এক ধাক্কায় ৩৮০ শতাংশ ও চিজের বিক্রি ২০০ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা যায়, বাটার মিল্ক ৪০ শতাংশ, ফ্লেভারড মিল্ক ২৮.৪ শতাংশ এবং লস্যির বিক্রি ১৯.৭ শতাংশ বেড়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, দামী শাড়ির বিক্রি ১.৭৫১ শতাংশ, দামী পোশাকের বিক্রি ৯১০ শতাংশ বেড়েছে। প্রক্রিয়াজাত খাবার ৪৬ শতাংশ, আসবাবপত্র ২০ শতাংশ এবং খেলাধুলোর সামগ্রীর ১৮ শতাংশ বেশি বিক্রি বেড়েছে।

অন্য সমীক্ষাটিতে ডিএমআই চালিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা নওয়াদা, পুর্ণিয়া, সমস্তিপুর, পশ্চিম চম্পারন ও কাইমুর জেলার ২,৩৩৮ পরিবারের কাছে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা গিয়েছে যে, মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর খাদ্যের জন্য যে পরিবারগুলির সাপ্তাহিক ব্যয় ছিল ১০০৫ টাকা, মদ নিষিদ্ধ হওয়ার পর সেই পরিবারগুলির এই খাতে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ১৩৩১ টাকা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯ শতাংশ পরিবার গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় নতুন সম্পদ কিনেছে। পাঁচ শতাংশ পরিবারের বেঁচে যাওয়া অর্থ ঘরবাড়ি সারানোর কাজে ব্যয় করেছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ৫৮ শতাংশ মহিলাই এখন মনে করছেন যে, তাঁদের মর্যাদা আরও বেড়েছে এবং পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরা আরও বেশি কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছেন।

এডিআরআই-এর রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে,টাকা আদায়ের জন্য অপহরণ ৬৬.৬ শতাংশ, খুনের ঘটনা ২৮.৩ শতাংশ এবং ডাকাতির ঘটনা ২.৩ শতাংশ কমেছে।