রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধের দাবিতে মামলা সুপ্রিম কোর্টে


নয়াদিল্লি: সমাজে ধর্মের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগেও এতটুকুও চির ধরেনি সেই গুরুত্বে। সাধারণ মানুষের সেই ধর্মীয় বিশ্বাসকে হাতিয়ার করেই ভোটের ময়দানে নামে রাজনীতির কারবারিরা। এবার এই রেওয়াজের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে।

রাজনীতি এবং ধর্মকে কখনই এক করে দেখা যাবে না। এই দুই বিষয়ের মধ্যে বজায় রাখতে হবে দূরত্ব। ধর্মের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে এর জন্য নিয়ে আসতে হবে কড়া আইন।
এমনই একগুচ্ছ দাবি তুলে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। মাম্লাটি গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী মাসের চার তারিখে সেই মামলার শুনানী হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রের শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টির নেত্রী অশ্বিনী উপাধ্যায় এই জনস্বার্থ মামলার পিটিশন দাখিল করেছেন।

১২৭ পাতার ওই পিটিশনে বলা হয়েছে যে রাজনৈতিক নেতা বা দল যাতে কোনোভাবেই রাজনীতির স্বার্থে ধর্মের অপব্যবহার করতে না পারে। এই বিষয়ে নিয়ে আসতে হবে কড়া আইন। সেই আইন কেমন হবে তা স্থির করতে কেন্দ্র সরকারকে নির্দেশিকা দেওয়ার কোথাও বলা হয়েছে। আইন অমান্য করলে রাজনৈতিক দল বা নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
লিখিত পিটিশনে আদালতের কাছে এই সকল আবেদন করা হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে অপব্যবহার করার প্রবণতা ক্রমাগত বাড়ছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়ার কোথাও বলা হয়েছে।

ধর্মনিরপেক্ষ এবং গণতান্ত্রিক দেশ হলেও ধর্মকে গণতন্ত্রের বড় উৎসব নির্বাচনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বারবার। এই নিয়ে কাদা ছোড়াছুঁড়িও কিছু কম হয়নি। কিন্তু, বিষয়টি বন্ধ হয়নি, উলটে বেড়ে গিয়েছে। অনেক রাজনৈতিক দল নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করেও ভোট ব্যাংকের স্বার্থে ধর্মকে হাতিয়ার করেছে। সমগ্র ভারতে এই উদাহরণ প্রচুর রয়েছে।

এই প্রক্রিয়ায় বারবার অপমান করা হচ্ছে দেশের সংবিধানকে। কারণ সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করার ফলে কিছুতেই আর ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখা যাচ্ছে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিজেপি নেত্রী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দায়ের করা পিটিশনে এই বিষয়টিরও উল্লেখ রয়েছে।