টাকার জন্য ছেলেকে দেখতে দেওয়া হয়নি, অভিযোগ রাহুলের, কী বললেন প্রিয়ঙ্কা?


ফের পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুললেন রাহুল-প্রিয়ঙ্কা।


এক সময় অন স্ক্রিনে হিট জুটি ছিলেন তাঁরা। অফ স্ক্রিনেও তাঁদের সম্পর্ক ঈর্ষণীয় ছিল। সেই জুটি, অর্থাৎ রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রিয়ঙ্কা সরকার।

প্রেম থেকে বিয়ে হয়। দু'জনের মাঝে আসে ছেলে সহজ। তার পর বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধুত্বটা ছিল। এ বার আর সেটাও রইল না। কারণ, রাহুলের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন প্রিয়ঙ্কা। অন্তত তেমনটাই দাবি রাহুলের। রাহুলও পাল্টা প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে তাঁর পরিবারের উপর মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন।

আনন্দবাজার ডিজিটালকে রাহুল বললেন, ''গত সাত মাস আমাকে ছেলের মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র টাকার জন্য। প্রিয়ঙ্কা আমার কাছ থেকে এককালীন এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছে। ওর এখন 'সুলতান'-এর মতো ছবি চলছে। আমি সিরিয়াল করি। এত টাকা কি দেওয়া সম্ভব? টাকাটা না দিলে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না, এটাও ও বলেছে। আমি নাকি ওকে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছি। এটা ও বিভিন্ন জায়গায় বলছে। আমি বিভিন্ন সূত্রে শুনলাম। আমাকে ডিরেক্ট কিছু বলেনি। বরং আমি তো বলব, আমার পরিবারের উপর ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে।''

উল্টোদিকে মোটা টাকা দাবি করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাও। তবে সঠিক অঙ্ক জানাতে রাজি হননি। একইসঙ্গে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, ছেলের কথা ভেবে এতদিন তিনি মুখ খোলেননি।

রাহুলের দাবি, ছেলের সঙ্গে প্রতি দিন তিনি দেখা করতেন। ছেলের খরচ বাবদ প্রিয়ঙ্কাকে মাসে মাসে টাকাও দিতেন। কিন্তু তার কোনও প্রমাণপত্র তাঁর হাতে নেই। প্রমাণ রাখার কথা এত দিন মনেও হয়নি। আগামী ১৭ জুলাই তাঁদের বিচ্ছেদ মামলার প্রথম শুনানি। যদিও রাহুল এখনও পর্যন্ত থানায় বা অন্য কোথাও কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিনেতা বললেন, ''এ বার প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে আমার কোর্টে দেখা হবে। আদালত যা বলবে, আমি সেই মতো কাজ করব।''

এ বিষয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের পক্ষ থেকে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ''গত দু'বছরে সহজের প্রতি রাহুল দায়িত্ব পালন করেনি। মাসে মাসে টাকা দেওয়ার কথা যদি ও বলে থাকে, সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমার একার পক্ষে সবটা মেনটেন করে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সেভিংস করা সম্ভব হচ্ছে না। দু'বছর আগে রাহুলের হাতে তেমন কাজ ছিল না। কিন্তু এখন ও মান্থলি ছ'-সাত লক্ষ টাকা রোজগার করে। ওর নিজের ফ্ল্যাট-গাড়ি রয়েছে। ফলে ও সহজে ছেলের জন্য কিছু কন্ট্রিবিউট করতে পারে। কিন্তু ও বারবারই বলেছে, ওর কাছে টাকা নেই। সেজন্য প্রথমে আমরা মিউচুয়াল ডিভোর্সের কথাই ভেবেছিলাম। কিন্তু তাতে যে যে শর্ত ছিল, রাহুল সেগুলো পালন করেনি। তাই সেটা তুলে নিয়ে আমি ডিভোর্স ফাইল করেছি। যার প্রথম হেয়ারিং জুলাইয়ের  মাঝামাঝি।''

মানসিক নির্যাতনের প্রশ্নে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ''হ্যাঁ, ও আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। রেগে দিয়ে আমার পেন্টিং ভেঙে দেওয়া, নিজের গায়ে গরম চা ঢেলে দেওয়া, কিছুই বাদ রাখেনি। আমার বাবা-মাকে নিয়ে অত্যন্ত খারাপ কথা বলেছে। হোয়াটসঅ্যাপে সে সব রয়েছে। চাইলে আমি সেগুলো দেখাতে পারি। এমনকী, ও সহজকেও বুঝিয়েছে, মা খারাপ। ছেলে এতটাই ছোট, স্কুলে গিয়ে কান্নাকাটি করেছে। ও ভেবেছিল, হয়তো মায়ের সঙ্গে আর থাকতে পারবে না। স্কুল থেকে সব কিছু আমাকে জানানো হয়।''

এক কোটি ২৫ লক্ষ টাকার বিষয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ''টাকার সঠিক অঙ্কটা আমি বলব না। তবে একটা মোটা টাকা দাবি করেছি।''