স্ত্রীর গলায় ব্লেড চালিয়ে, নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের!


মালদা : প্রথমে স্ত্রীর গলায় ব্লেড চালিয়ে খুনের চেষ্টা। পরে নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল এক যুবক। পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই এমন করেছে যুবক। বর্তমানে দু'জনেই গুরুতর আহত অবস্থায় মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু'জনের পরিবারের তরফে গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

মালদার গাজোল থানার চম্পাদিঘি গ্রামের ঘটনা। ওই গ্রামের যুবক দীপঙ্কর বিশ্বাস (২২)-এর সঙ্গে ন'মাস ধরে সম্পর্ক ছিল স্থানীয় এক যুবতির। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দীপঙ্কর ওই যুবতিকে বিয়ে করে দিল্লি চলে যায়। সেখানে একটি কেবল অপারেটর কম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করত দীপঙ্কর। কিছুদিন আগে যুবতির বাবা দিল্লি গিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন। ফিরে আসে দীপঙ্করও। দিল্লি থেকে এসে বাপেরবাড়িতেই থাকতে শুরু করে যুবতি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফিরে আসার পর পাড়ার আরেক যুবকের সঙ্গে সে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেটা মেনে নিতে পারছিল না দীপঙ্কর। স্ত্রীর গলায় ব্লেড চালিয়ে খুনের চেষ্টা করে, পরে নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে দীপঙ্কর। তবে দীপঙ্করের পরিবারের বক্তব্য, যুবতি মানসিকভাবে অত্যাচার করছিল স্বামীকে। তা সহ্য করতে না পেরে গতকাল সন্ধ্যায় স্ত্রীর গলায় ব্লেড চালিয়ে দেয় দীপঙ্কর। রক্তাক্ত অবস্থায় যুবতি লুটিয়ে পড়লে নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। সেমসয় এই দৃশ্য দেখে ফেলে যুবতির পরিবারের এক সদস্য। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হন। দু'জনকে প্রথমে গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সেখান থেকে রেফার করে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। 

ঘটনাটি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি যুবতির পরিবারের লোকজন। দীপঙ্করের দিদি মনা বলেন, তাঁর ভাই কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসার জন্য তিনি গতমাসে ভাইকে হাসপাতালে ভরতি করেছিলেন। কিন্তু দু'দিন পরেই দীপঙ্করকে সেখান থেকে নিয়ে চলে আসে ওই যুবতি। তারপরই তারা বিয়ে করে চলে যায় দিল্লি। মাসখানেক সেখানে সংসার করে। দীপঙ্কের সঙ্গে ওই যুবতির যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে তা দুই পরিবার জানত। মনা বলেন, "মেয়েটা প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসত। ওর বাবা-মাও আসত। সকলের সামনেই ও আমার ভাইয়ের সঙ্গে এক বিছানায় শুয়ে পড়ত। আমাদের সামনে মদ খেত। আমরা যখন বাড়িতে থাকতাম না তখন ওই মেয়েটা অনেকবার আমাদের বাড়ি আসত। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এমনিই হয়ত আসছে।"

গাজোল থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব উঠে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লি থেকে বাড়ি ফেরার পর ওই যুবতির সঙ্গে আরেক যুবকের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তবে এই মুহূর্তে দু'জনের কেউ কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। একটু সুস্থ হলেই তাদের জেরা করা হবে।