চরম যৌনসুখের জন্য নারীর পুরুষকে প্রয়োজন নেই, বলছে সমীক্ষা


'আর্কাইভ অফ সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার'-এর সদ্য প্রকাশিত হয়েছে এমনই এক রিপোর্ট। রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে ৩০০০ মহিলার উপরে সমীক্ষা চালিয়ে।

মহিলারা নিজেরাই যৌনতায় স্বয়ংসম্পূর্ণা, জানাচ্ছে সমীক্ষা।

নারী স্বয়ংসম্পূর্ণা। প্রবাদ নয়, সমীক্ষা বলছে। প্রতি মাসে অন্তত ৫৫ বার যৌনসুখের শীর্ষে পৌছতে পারেন মহিলারা।

শুধু তাই নয়, সমীক্ষার পরের অংশটি পুরুষদের একহাত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। নারীর এই চূড়ান্ত সুখের শৃঙ্গে চড়ার জন্য কোনও পুরুষের সাহায্য প্রয়োজন নেই।

আন্তর্জাতিক জার্নাল 'আর্কাইভ অফ সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার'-এর সদ্য প্রকাশিত হয়েছে এমনই এক রিপোর্ট। রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে ৩০০০ মহিলার উপরে সমীক্ষা চালিয়ে। এই ৩০০০ মহিলাকে সমীক্ষকরা দু'টি ক্যাটেগরিতে ভাগ করে নিয়েছিলেন। প্রথম দলটিতে রয়েছেন সেই সব মহিলা, যাঁদের যৌনসঙ্গী প্রাথমিক ভাবে পুরুষ। আর দ্বিতীয় দলটিতে রয়েছেন তাঁরা, যাঁদের যৌনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ মহিলা। চার সপ্তাহ ধরে সমীক্ষাটি চালানো হয়। তার পরেই প্রকাশিত ফলটি পুরুষের চক্ষু চড়কগাছ করার জন্য যথেষ্ট।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এই সমীক্ষার ফলের একটি অংশে বলা হচ্ছে— হেটেরোসেক্সুয়ালদের ক্ষেত্রে মিলনের প্রবণতা মাসে ১৫ বার। লেসবিয়ানরা মিলিত হন গড়ে ১০ বার। কিন্তু যৌনমিলনের হারের সঙ্গে মহিলাদের চরম শারীরিক সুখ বা অরগ্যাজমের কোনও সম্পর্ক নেই।

এইখানেই টেক্কা দিচ্ছেন মহিলারা। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, মহিলাদের সঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করেন যে সব মহিলারা, অর্গ্যাজমে তাঁরা অন্যদের তুলনায় প্রায় তিন গুণ এগিয়ে। অন্য দিকে,'আর্কাইভ অফ সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার' এর এই সমীক্ষাতেই দেখানো হচ্ছে, ৯৫ শতাংশ মহিলাই মনে করেন, তাঁদের পুরুষ যৌনসঙ্গী যৌনতা শেষ করেন অর্গ্যাজমের মাধ্যমে। অন্য দিকে, ৭৩ শতাংশ পুরুষ মনে করেন তাঁদের সঙ্গে সঙ্গমে সঙ্গিনীরা এই চরম অনুভবে পৌঁছতে পারেন।

কেন এই বৈষম্য? কেন পুরুষের তুলনায় মহিলারা চরম সুখে পৌঁছনোর হার কম? অর্গ্যাজমের প্রশ্নে কেন একজন মহিলার সঙ্গে মহিলারা বেশি স্বচ্ছন্দ?

আসলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে যৌনতার ফ্রেমটি পুরুষতান্ত্রিকতার নিগড়ে বাধা। পুরুষদের যৌনতা লিঙ্গকেন্দ্রিক। একটি অরগ্যাজমে তাদের যৌনতা শেষ হয়। অন্য দিকে, নারীর যৌনতা শুধুই যোনিকেন্দ্রিক নয়, এবং চরমে পৌঁছতে নারীদের তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। নারীরা পরস্পরকে যৌনতায় সেই সময়টা দেন। উৎপাদন কেন্দ্রিক যৌনতায় বিশ্বাসী পুরুষরা কিন্তু বেশির ভাগই নিজস্ব অরগ্যাজমটিকে দীর্ঘায়িত করতে পারেন না। ফলত নারীরা চরম সুখটি থেকে বঞ্চিত হন, অনেক সময়ই তাকে 'ফেক অরগ্যাজম'-এর ভান করতে হয়।

প্রকৃত যৌনশিক্ষার অভাব, পুরুষের উৎপাদনকামী যৌনতার ঝোঁক, সঙ্গমের সময় তাড়াহুড়ো— এগুলিই মহিলাদের বঞ্চিত থাকার মূল কারণ। অন্য দিকে লেসবিয়ান যৌনতা এর ঠিক উলটো। কাজেই মহিলারা মহিলাদের সঙ্গী হিসেবে অনেক বেশি সাবলীল।