রাজ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নে ১৮,০০০ কোটি

রবিবার, ছুটির দিনে রাজ্যবাসীকে সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাজ্য সরকার পরিকাঠামো উন্নয়নে ১৮,০০০ কোটি (আঠারো হাজার কোটি) টাকা অনুমোদন করেছে।  

আগামী শুক্রবার বাণিজ্যিক সফরে চীন যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে রবিবার তিনি নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, 'পরিকাঠামো উন্নয়নে বাংলা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামী দিনে এর ফলে রাজ্য জুড়ে বিপুল কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ হবে'। 

সেই অগ্রগতির বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  ফেসবুকে (এবং টুইটারে) তিনি জানিয়েছেন, ওই বিপুল বরাদ্দ রাজ্য জুড়ে উড়ালপুল, গ্রা–শহরে পানীয় জল প্রকল্প, সেতু নির্মাণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, সস্তার আবাসন, সেচ–সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামো গড়তে ব্যবহার করা হবে। 
কিছুদিন আগেই 'মা–‌মাটি–‌মানুষের সরকারে'–এর ৭ বছর পূর্ণ হয়েছে। গত ৭ বছরে তাঁর সরকার যে সব উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে বাংলার মানুষকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। জানিয়েছেন, কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা সত্ত্বেও তিনি বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। 
অন্যান্য বিভিন্ন বিদেশ সফরের মতোই মমতার চীন সফরেরও মূল উদ্দেশ্য বাংলায় বিনিয়োগ আনা। মুখ্যমনন্ত্রীর সফর ঠাসা বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তারমধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেখানকার শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক। 

সেই সফরের আগে রাজ্যে  পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে মমতার এদিনের প্রকাশ্য ঘোষণা যথেষ্ট 'তাৎপর্যপূর্ণ'। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে খরচ ২০১১ সালের তুলনায় ৪ গুণ বেড়েছে। সম্প্রতি ১৮ হাজার কোটি টাকার নতুন পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন করা তো বটেই, চলতি আর্থিক বছরেও বাজেটে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২৫,৭৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এর সঙ্গেই অতিরিক্ত ১৮ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন করা হল। 

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপর। গত ৭ বছরে তিনি কয়েকটি বিদেশ সফরে গিয়ে বিনিয়োগের বিভিন্ন চুক্তি করে এসেছেন। কাজও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যশ্রী, সবুজসাথী, জল ধরো জল ভরো–সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছেন। মমতার স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী বিদেশ থেকে পুরস্কারও নিয়ে এসেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শিল্পে বিপুল সাফল্যের পাশাপাশি উন্নতি হয়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও। সরকারি হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান খোলা হয়েছে। প্রচুর কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। গ্রামের পড়ুয়ারা এখন স্কুলমুখী হয়েছে। 

পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য মমতা প্রশাসনকে নিয়ে গেছেন শহর থেকে দূরে। তিনি নিজে প্রতিটি জেলায় গিয়ে একাধিকবার প্রশাসনিক বৈঠকও করেছেন। 

তারই ফল মমতা পেয়েছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। গ্রামের স্বাস্থ্য বদলের  ফলেই ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৮ সাললের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল সাফল্য এসেছে। ২০টি জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে এসেছে। গোটা রাজ্যে মমতার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অবিসংবাদী নেতৃত্ব আরও একবার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রশাসনকে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে দলের নেতাদের বলেছেন, এলাকার উন্নয়নে কোনও হস্তক্ষেপ না করতে। এসেছে। চীন থেকে ফিরে এসে তাঁর বিভিন্ন জেলায় সফর করার কথা। 

তার মধ্যেই পরিকাঠামো ক্ষেত্রে এই বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা দেশবিদেশে নিশ্চিত বার্তা বহন করবে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের বৃহদংশ। মনে করছেন মমতার রাজনৈতিক সহকর্মীরাও।  ‌‌‌