দু’দফায় অফিস খুলে প্রতারণা, গ্রেফতার চার


প্রতারণার ফাঁদ পাতার জন্য ভিন্ন কৌশল নিয়েও শেষরক্ষা হল না!চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়ো সংস্থা খুলে টাকা হাতানোই ছিল তাদের লক্ষ্য। প্রতারণার ফাঁদ পাততে সংস্থার নাম, ঠিকানা পাল্টালেও প্রতারকেরা বদলায়নি। ফলে চাকরিপ্রার্থী যুবক পুরনো প্রতারকদের দেখেই সটান হাজির হন থানায়। অভিযোগ পেয়ে চার প্রতারককে হাতেনাতে ধরে এন্টালি থানার পুলিশ। সোমবার রাতে, শিয়ালদহ এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম, মানবেন্দ্র সরকার, পীযূষকান্তি সাহা, বিশ্বজিৎ গায়েন এবং সোমনাথ বিশ্বাস।

পুলিশ সূত্রে খবর, বছরখানেক ধরে মেট্রো রেল ও বিমানবন্দরে চাকরির টোপ দিয়ে এন্টালিতে প্রথমে একটি অফিস খুলে শ'খানেক যুবকের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছিল ধৃতেরা। প্রায় এক বছর পরে প্রথম অফিসের ঠিকানা, সংস্থার নাম পাল্টে একই কায়দায় ফের প্রতারণা চক্র চালানোর চেষ্টা করেছিল ধৃতেরা। বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির খোঁজে নতুন অফিসে গিয়ে আগের প্রতারকদের দেখতে পান বালির বাসিন্দা অভিযোগকারী, অশোক অধিকারী।

তদন্তকারীরা জানিয়েছে, চক্রের মূল পাণ্ডা মানবেন্দ্র। তার নেতৃত্বেই বাকি তিন জন বছরখানেক আগে প্রথমে এন্টালি থানা এলাকার দেব লেনে একটি অফিস তৈরি করে। মেট্রো ও বিমানবন্দরে লোভনীয় চাকরির সুযোগ দিয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিত তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার বালির বাসিন্দা অশোক একটি খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে এন্টালির দেব লেনের ওই অফিসে যোগাযোগ করেন।

পুলিশকে অশোক জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রথমে ফর্ম ভর্তি বাবদ তাঁর কাছ থেকে তিনশো টাকা নেওয়া হয়। গত ২৩ মে তাঁর হাতে একটি নিয়োগপত্র দিয়ে ওই সংস্থা তাঁর থেকে প্রায় দশ হাজার টাকা নেয়। সংস্থার কথা মতো গত মাসের শেষ সপ্তাহে অশোক কলকাতা বিমানবন্দরের বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু ওই নিয়োগপত্র দেখিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরের বিভিন্ন অফিসে তন্নতন্ন করে খোঁজ করেও কোনও কিছু না পেয়ে সব শেষে মানবেন্দ্রকে ফোন করেন। মানবেন্দ্র তাঁকে ১ জুন দেব লেনের অফিসে আসতে বলেছিলেন। ১ জুন অফিসে এসে দেখেন, অফিসে তালা ঝোলানো এবং তাঁর মতো অনেক চাকরিপ্রার্থী প্রতারিত হয়ে হাজির হয়েছেন।

সোমবার ফের খবরের কাগজে আরও একটি বিজ্ঞাপন দেখে, অশোক এন্টালির আনন্দ পালিত রোডে হাজির হয়েছিলেন। ওই অফিসে গিয়েই তিনি দেখেন, আগের বার তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করা যুবকেরাই সেখানেও হাজির। তিনি আর সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে এন্টালি থানায় পৌঁছে গিয়ে পুলিশকে সবিস্তার জানান। দ্রুত সাব ইনস্পেক্টর বীরেশ্বর রায়ের নেতৃত্বে চার যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে ১৪ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের হয়।