শীতঘুমে সারদা-নারদ


আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পি চিদম্বরমের ডাক পড়েছে আগামী সপ্তাহে। এয়ার এশিয়া মামলায় এনসিপি-র প্রফুল্ল পটেল, রাষ্ট্রীয় লোক দলের অজিত সিংহরাও বাদ যাচ্ছেন না। কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে না মেলাতেই মায়াবতীর বিরুদ্ধে সিবিআই নতুন ফাইল খুলেছে। এই সব মামলা নিয়ে সিবিআই এখন তুমুল ব্যস্ত।

সিবিআইয়ের রোজনামচা থেকে শুধু হারিয়ে গিয়েছে সারদা-রোজভ্যালি-নারদ কেলেঙ্কারি। আর এর পিছনে রাজনৈতিক অঙ্কই দেখছেন বিরোধীরা।

২০১৪-র মে মাসে নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার দিন কয়েক আগে সারদা-কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মোদী জমানায় চার বছর তদন্তের পরে, গোটা সাতেক চার্জশিট পেশ করে সিবিআই এখন বলছে, আরও তদন্তের প্রয়োজন! প্রশ্ন উঠেছে, কবে মিলবে 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র'-এর খোঁজ? কবেই বা 'প্রভাবশালী'-দের কাঠগড়ায় তোলা হবে? নারদ নিয়ে সিবিআই তদন্তের হাল আরও করুণ।

সারদা-নারদ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দিল্লির কাছে বিস্তর অভিযোগ করেছেন। তাঁরাই এখন অনুযোগের সুরে বলছেন, মমতা-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই যে তদন্ত শুরু করেছিল, তা কার্যত থমকে রয়েছে।

প্রশ্নের জবাবে সিবিআই সূত্রের ইঙ্গিত, এই তদন্তগুলি নিয়ে উপরমহল থেকে তেমন চাপ নেই, বরং 'ধীরে চলো' নীতির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর, কলকাতায় নতুন যুগ্ম-অধিকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার পরে পঙ্কজ শ্রীবাস্তব সারদা-নারদ মামলাগুলির 'স্ট্যাটাস রিপোর্ট' জানিয়ে সদর দফতরকে ভবিষ্যতের রূপরেখা জানিয়েছিলেন। তাতে এখনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের অবশ্য দাবি, ''কোনও তদন্ত বন্ধ নেই। সব দোষীই জেলে যাবে। একটু অপেক্ষা করুন।''

সারদা-নারদ প্রসঙ্গে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ''দিদিভাই-মোদীভাই ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের জন্যই এই তদন্তে গতি নেই।'' কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, মমতা ফেডেরাল ফ্রন্ট নিয়ে উদ্যোগী হয়ে বিরোধী জোটে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দিতে চান। তাই সিবিআইকে এ সব ক্ষেত্রে এগোতে দিচ্ছেন না মোদী।

অথচ এর উল্টো ছবি অন্যত্র। বিজেপি বিরোধী জোটের একের পর এক নেতার বিরুদ্ধে সিবিআই সক্রিয়তা আচমকা বেড়েছে। এই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ''কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই পদক্ষেপ থেকেই প্রমাণিত, রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে বিকল্প জোটকে বিজেপি ভয় পাচ্ছে। অন্য দিকে মমতা ফেডেরাল ফ্রন্টের ডাক দিয়ে সেই বিরোধী জোট ভাঙতে চাইছেন। তাতে বিজেপিরই সুবিধা হবে। তাই সিবিআইও নিশ্চুপ!''