১৭ বছর জমে থাকা খুলি-হাড়ের ঠাঁই হল হাসপাতালে


মানুষের মাথার খুলি। হাত-পায়ের হাড়। শিরদাঁড়া। ১৭ বছর ধরে পড়েছিল কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে, শুল্ক দফতরের হেফাজতে। শুক্রবার শহরের তিন সরকারি হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধানদের ডেকে সেই খুলি-হাড়গোড় তুলে দেওয়া হল।

২০০১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২৩টি মামলার ৩০টি মানবদেহের খুলি ও হাড়গোড় জমে ছিল শুল্ক দফতরে। সবগুলিই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদ ও বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্ত থেকে। শুল্ক কমিশনার পার্থ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, পাচারকারীরা বস্তায় ভরে খুলি ও মাথায় চাপিয়ে হাড় নিয়ে যাচ্ছিল। সে সময়ে তাদের তাড়া করে ধরা হয়। প্রতিটি ঘটনাতেই পাচারকারীরা বস্তা ভর্তি হাড়গোড় ফেলে পালিয়ে যায়। সেগুলি জমা পড়ে শুল্ক দফতরেই।

পার্থবাবু জানিয়েছেন, এ দেশে পূর্ণবয়স্ক মানুষের কঙ্কালের দাম ২০ হাজার টাকা। কিন্তু, বাংলাদেশে তা ৫০ হাজারে বিক্রি হয়। তাঁর সন্দেহ, কবর থেকে তুলে বা শ্মশান থেকে জোগাড় করে ওই কঙ্কাল পাচার করা হচ্ছিল। তবে, এ দিন ওই হাড়গোড় নিতে আসা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার এবং এসএসকেএমের তিন চিকিৎসক শর্মিলা পাল, করবী বড়াল এবং আশিস ঘোষাল জানিয়েছেন, বাজেয়াপ্ত হওয়া ওই হাড়গোড় রাসায়নিক দিয়ে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হয়েছে। যার অর্থ, কঙ্কাল শুধু জোগাড় করাই নয়, তা ব্যবহারযোগ্য করেই বিক্রি করা হচ্ছিল।


হাসপাতালগুলি থেকে জানা গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য কঙ্কালের অভাব রয়েছে। বাজার থেকে কঙ্কাল কিনে পড়াতে হয় হাসপাতালগুলিকে। শুল্ক দফতরের বাজেয়াপ্ত করা এই কঙ্কালগুলি পেলে তাদের সুবিধাই হবে। ইদানীং অনেকে দেহ দান করছেন। কিন্তু, সেই দেহ নিয়ে অন্য ধরনের শিক্ষা-প্রক্রিয়া চলে। একটি দেহ থেকে কঙ্কাল বানানোর প্রক্রিয়াও দীর্ঘমেয়াদি। তার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনুমতির প্রয়োজন। তাই কঙ্কালের অভাবটা থেকেই যায়।