বাবা নেই, এবার মায়েরও ব্রেন ডেথের খবর পেতেই কলেজছাত্রী মেয়ে নিল চরম সিদ্ধান্ত


সদ্য আঠেরো পেরিয়ে উনিশে পা। আর পাঁচটা কলেজ পড়ুয়ার মত সে-ও ভালোবাসত সাজগোজ করতে। বন্ধুদের সঙ্গে হই-হুল্লোড় করতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেসব আপডেটও দিত। কিন্তু শুক্রবার রাতে এক লহমায় বদলে গেল 'সাজানো গোছানো' জীবনটা। মায়ের ব্রেন ডেথের খবর পেয়েই গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল কলেজছাত্রী মেয়ে। শনিবার রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার তিলজলা এলাকায়। ১৯ বছরের উত্তরা চৌধুরী হেরম্বচন্দ্র কলেজের বাণিজ্য বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কিডনিজনিত সমস্যার কারণে ২০১৪ সালে মৃত্যু হয় উত্তরার বাবার। স্বামীকে বাঁচাতে কিডনি দান করেছিলেন উত্তরার মা জুলি চৌধুরী। কিন্তু সে চেষ্টা বিফল হয়। মৃত্যু হয় উত্তরার বাবার। এদিকে কিডনি দান করার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন জুলি চৌধুরী। বিগত ৪ বছর ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার লিভারের সমস্যা নিয়ে বেলভিউতে ভর্তি হন উত্তরার মা। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ চিকিত্সকরা জানান, ব্রেন ডেথ হয়েছে জুলি চৌধুরীর।

এই খবর পাওয়ার পরই ১০টা নাগাদ নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় উত্তরা। অনেক ডাকাডাকিতেও সাড়া না মেলায়, তারপর দরজা ভাঙা হয়। গলায় গোলাপি রঙের ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উত্তরার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন আত্মীয়-পরিজনরা। এরপর ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিত্সকরা উত্তরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের বক্তব্য, বাবার মৃত্যু হয়েছিল আগেই। এবার মায়ের মৃত্যুর খবর পেতেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে উত্তরা। কোনও ভাইবোন না থাকায় একদম নিঃসঙ্গ হয়ে যায় সে। আর সেকারণেই এই দুনিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় কলেজছাত্রী। এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য নেই। আর কেউ কোনও অভিযোগও দায়ের করেনি।