ওপার বাংলায় শৌচাগারে সন্তান প্রসব, খোঁজ মিলল রোকসানার পরিবারের


ঢাকা: স্বামী ছেড়ে পালায়। বিপাকে পড়ে ঢাকার শৌচাগারেই সন্তান প্রসব করেছিলেন ভারতীয় নাগরিক রোকসানা। গত সোমবারের ঘটনায় রীতিমত শোরগোল পড়ে যায়। বিদেশে এহেন বিপাকে পড়ে ভেঙে পড়েন ওই মহিলা। তবে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় খোঁজ মিলেছে রোকসানার পরিবারের। যদিও এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁর স্বামীকে। ঢাকাতেই রয়েছেন রোকসানার ননদ। আপাতত তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশি নাগরিক আবদুলের সঙ্গে রোকসানার বিয়ে হয়। বিয়ের পরই স্ত্রীকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে যায় আবদুল। তবে নতুন বউকে নিজের বাড়িতে তোলার সাহস হয়নি। নারায়ণগঞ্জে আবদুলের বোনের বাড়ি, সেখানেই ছিল নব দম্পতি। পেশায় আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী আবদুল বাংলাদেশ থেকে ভারতে ব্যবসা করতে আসত। সেই সূত্রেই রোকসানার সঙ্গে আলাপ। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রোকসানার বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে দু'জনের বিয়ে দিয়ে দেন।

ঘটনার দিন স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আবদুল। সেখান থেকে একজন চিকিৎসকের কাছে যায় তারা। তারপর রোকসানাকে কমলাপুর রেলস্টেশনে রেখে বোনকে নিয়ে উধাও হয়ে যায় আবদুল। তারপরই শৌচাগারে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোখসানা বাংলা বলতে পারেন না, বুঝতেও পারেন না। তিনি কথাও বলছিলেন খুব কম। কোনওমতে, তাঁর ননদের নাম ও বাড়ির ঠিকানা জানান তিনি। জানা গিয়েছে, আবদুলের পুরো নাম আবদুল হক। বয়স ৩২ বছর। চট্টগ্রামে তার এক স্ত্রী রয়েছে। তবে কোনও  সন্তান নেই। ব্যবসার কাজে বেঙ্গালুরু যায় সে। সেখানেই আলাপ হয় রোকসানার সঙ্গে। ১০-১২ দিন আগে নতুন বউ রোকসানাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসে সে।

বৈধভাবেই প্রথম শ্বশুরবাড়ির দেশে পা রেখেছিলেন রোকসানা। এরপর দীর্ঘদিন কাটলেও তাঁর বাপের বাড়ি যাওয়া হয়নি। এরমধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। বেশ কিছুদিন আগে দেশে যাওয়ার কথা ঠিক হয়। সেইমতো পাসপোর্ট সংক্রান্ত কিছু অফিশিয়াল কাজকর্ম ছিল। আবদুল তা করতে গিয়ে রোকসানার থেকে তাঁর পাসপোর্ট চেয়ে নেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি হারিয়ে যাওয়াতেই ঘটে বিপত্তি। স্ত্রীকে ভারতে ফেরানোর রাস্তা একপ্রকার বন্ধ। বুঝতে পেরেই সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায় সে। আপাতত হাসপাতালেই রয়েছেন রোকসানা। শিশুটিকে রাখা হয়েছে বেবি কেয়ার ইউনিটে। দু'জনেই সুস্থ আছেন।