মামির সঙ্গে স্বামীর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক, মানিকতলায় বধূর অস্বাভাবিক মৃ্ত্যু


মামির সঙ্গে এক বিছানায় স্বামীকে দেখেছিলেন বছর একুশের ফুলকুমারী। আর সেটাই হল কাল। প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। স্ত্রী হিসাবে স্বামীর কাছ থেকে নিজের অধিকার বুঝে নিতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন নিজের প্রাপ্য সম্মানটুকু। পরিণামে যা মিলেছিল, তা হল অশান্তি, লাঞ্চনা, মার, অত্যাচার। আর তার সঙ্গে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো পণ দিতে না পারার পুরনো সমস্যাটি। বিয়ের তিন বছর পর বধূ নির্যাতনের আরও এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতার মানিকতলাবাসী। অভিযোগ, বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে।

বছর তিনেক আগে ফুলকুমারী হালদারের সঙ্গে সম্বন্ধ বিয়ে হয় মানিকতলার বাসিন্দা দীপক মারিকের। দীপক গেঞ্জি কারখানার শ্রমিক। ফুলকুমারীর পরিবারের দাবি, বিয়ের সময় দীপকের পরিবার এক লক্ষ টাকা পণ দাবি করেছিলে। কিন্তু বিয়ের যাবতীয় খরচ মেটানোর পর আর পণ দেওয়া সম্ভব হয়নি ফুলকুমারীর পরিবারের পক্ষে। এই নিয়ে ফুলকুমারীর ওপর মাঝেমধ্যে মানসিক চাপ দেওয়া হলেও বিয়ের প্রথম কয়েকটা মাস দীপক-ফুলকুমারীর বনিবনা ভালোই ছিল। কিন্তু একদিন নিজের স্বামীকে তাঁর মামীর সঙ্গে এক বিছানায় দেখে ফেলেছিলেন ফুলকুমারী। এরপরই সম্পর্ক-বিশ্বাসে ভাঙন ধরে। দীপকের সঙ্গে নিত্য অশান্তি হতে থাকে ফুলকুমারীর। চরমে ওঠে ফুলকুমারীর ওপর অত্যাচার।

ফুলকুমারীর পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ তাদের কাছে একটি ফোন আসে। তাতে জামাই দীপক জানান, ''ফুলকুমারী বিষ খেয়েছে, আরজিকর হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে...'' ফোন পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান ফুলকুমারীর বাবা-মা। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। মৃত্যু হয়েছে ফুলকুমারীর।

ছোট মেয়ের এই মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না ফুলকুমারীর পরিবার। ঘটনায় তদন্তে নেমেছে মানিকতলা থানার পুলিস। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

উল্লেখ্য, স্বামীর এই সম্পর্কের কথা বাপেরবাড়িতে এসে জানিয়েছিলেন ফুলকুমারী। কিন্তু বাপেরবাড়ির তরফে তাঁকে বুঝিয়ে ফের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেটাই তাঁর জীবনের শেষ দিনটা ডেকে আনল। যদি তখনও ফুলকুমারীর পরিবার যথাযথ পদক্ষেপ করত, তাহলে হয়তো এই দিন দেখতে হত না তাঁদের।